অনলাইনে ৮ হাজার ফ্যান অর্ডার দিয়ে ট্রাকভর্তি ইট-ঝুট কাপড় পেলেন ব্যবসায়ী
বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ
অনলাইনে কম মূল্য দেখে একসঙ্গে আট হাজারেরও বেশি ফ্যানের অর্ডার করেন ব্যবসায়ী মো. তরিকুল ইসলাম। অর্ডারের সময় নিজ দোকানের ঠিকানাও দেন তিনি। ঠিকানা অনুযায়ী পণ্যবোঝাই একটি কাভার্ডভ্যান পৌঁছায়। কিন্তু কাভার্ডভ্যানে থাকা কার্টনগুলো খুলতেই তার চোখ উঠে কপালে। ফ্যানের বদলে তিনি পেলেন ইট ও ঝুট কাপড়।
ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়। তিনি জিহাদ ইলেকট্রনিক্সের মালিক। এ ঘটনায় চালক-হেলপারসহ কাভার্টভ্যানটি আটক করেছে উল্লাপাড়া মডেল থানা পুলিশ।
তরিকুল ইসলাম জানান, অনলাইনে কম মূল্যে ভালো মানের ইলেকট্রনিক ফ্যান বিক্রির বিজ্ঞাপন দেখে বুধবার চট্টগ্রামের সুমাইয়া ইলেকট্রনিক্সের দোকানে মুঠোফোনে যোগাযোগ করেন তিনি। একপর্যায়ে তিনি আট হাজার ২২৩টি নেট মোটর ফ্যানের অর্ডার দেন। এসব ফ্যানের মূল্য ১৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
অনলাইনে অর্ডার দেয়ার সময় সুমাইয়া ইলেকট্রনিক্সের পক্ষ থেকে সাইফুল ইসলামের সঙ্গে তরিকুলের কথা হয়। এ সময় মেসার্স ফরিদা কালার নামে এক স্বজনের হিসাব নম্বর তরিকুলকে দেন সাইফুল ইসলাম। কথা হয় টাকা পাঠানোর আগেই ফ্যানগুলো উল্লাপাড়ায় পৌঁছে যাবে। তবে কার্টন খোলার আগেই উত্তরা ব্যাংকের মাধ্যমে তাকে পুরো টাকা পরিশোধ করতে হবে।
সেই অনুযায়ী বৃহস্পতিবার দুপুরে উল্লাপাড়ায় ২৭৪টি কার্টনবোঝাই একটি কাভার্টভ্যান তরিকুলের দোকানের সামনে পৌঁছায়। এরপর কথা অনুযায়ী উত্তরা ব্যাংক উল্লাপাড়া শাখা থেকে মেসার্স ফরিদা কালার নামের হিসাবে টাকা পাঠান তরিকুল। টাকা পাঠানোর পর ফ্যানের কার্টনগুলো খুলতে গিয়ে তিনি দেখতে পান প্রতিটির মধ্যে কাপড়ের ঝুট এবং একটি করে ইট দেয়া রয়েছে।
তিনি জানান, প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়েছেন আঁচ করতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি উল্লাপাড়া মডেল থানা পুলিশকে জানান তিনি। এরপর দ্রুত উত্তরা ব্যাংক উল্লাপাড়া শাখায় গিয়ে তার পাঠানো টাকার পেমেন্ট বন্ধ করার ব্যবস্থা নেন। এদিকে পুলিশ কাভার্টভ্যানের চালক ও হেলপারকে আটক করে।
তরিকুল আরো জানান, উত্তরা ব্যাংক উল্লাপাড়া শাখা ম্যানেজার তাকে নিশ্চিত করেছেন, টাকা পেমেন্ট বন্ধ করা হয়েছে। তরিকুল এ ব্যাপারে সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে উল্লাপাড়া থানায় প্রতারণার মামলা করেছেন।
এ ব্যাপারে কথিত সুমাইয়া ইলেকট্রনিক্সের পক্ষে মের্সাস ফরিদা কালারের মালিক সাইফুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
কাভার্ডভ্যানের চালক মো. মাছুম জানান, চট্টগ্রামের সিমরাইল ট্রাকস্ট্যান্ড থেকে ১৭ হাজার টাকা ভাড়ায় এসব কার্টন তিনি উল্লাপাড়ায় নিয়ে আসেন। কার্টনগুলোর মধ্যে কী ছিল তিনি তা দেখেননি।
উল্লাপাড়া মডেল থানার এসআই হুজ্জাতুল জানান, আটক চালক ও হেলপারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।