আত্মহত্যার পরেও সুদের টাকার জন্য ফোন!
বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ
‘সুদের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যা করেছেন’ বরগুনার এক ক্ষুদ্র বস্ত্র ব্যবসায়ী। চিরকুটে লিখে গেছেন, ‘সুদ ব্যবসায়ীর অপমানে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।’ তার মৃত্যুর পরও মোবাইলে ফোন করে টাকা চাইলেন ওই সুদ ব্যবসায়ী।
শনিবার (০৭ নভেম্বর) সকালে বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউয়িনের নলী বাজারে বাসার পেছনে মেহগনি গাছে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত বেলাল হোসেন পলাশ (৩৭) নলটোনা ইউনিয়নের গর্জনবুনিয়া এলাকার শাহজাহান হাওলাদারের ছেলে। তিনি নলী বাজারে কাপড়ের ব্যবসা করতেন।
বরগুনা থানার ওসি তারিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, পুলিশ পলাশের মরদেহ উদ্ধারের সময় তার জামার পকেট থেকে চিরকুট উদ্ধার করেছে।
পলাশের স্ত্রী রোকসানা বেগম জানান, আসল টাকার কিস্তি পরিশোধের জন্য চাপ দেন সৌরভ। গত বুধবার সৌরভকে ওই টাকা পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু টাকা পরিশোধ না করায় বৃহস্পতিবার পলাশকে অকথ্য গালাগাল করেন ওই সুদ ব্যবসায়ী। একপর্যায়ে অনুনয়-বিনয় করে শনিবার পর্যন্ত সময় নেন পলাশ। শনিবার ফজরের নামাজের পর সৌরভ টাকা চেয়ে পলাশকে ফোন দিয়ে গালিগালাজ করেন। অপমানে লজ্জায় ঘৃণায় ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে পলাশ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। সাড়ে ৭টার দিকে আবারও পলাশের মুঠোফোনে কল করে সুদ ব্যবসায়ী সৌরভ। তখন পলাশের স্ত্রী রোখসানা ফোন রিসিভ করে সৌরভকে জানান, পলাশ আত্মহত্যা করেছে।
এতে সুদের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় অপমানে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন মর্মে লিখে রেখেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনায় মামলা হবে।
পলাশের মা বলেন, ২০১৫ সালে বরগুনার পল্লী চিকিৎসক জহিরুল ইসলাম সৌরভের কাছ থেকে প্রথমে তিন লাখ টাকা ধার নিয়েছিলেন। পর্যায়ক্রমে ওই চিকিৎসকের কাছ থেকে সাড়ে সাত লাখ টাকা নেন পলাশ।
এ ঘটনার পর ফোন বন্ধ করে গা ঢাকা দিয়েছেন পল্লী চিকিৎসক জহিরুল ইসলাম সৌরভ। বরগুনার ফার্মেসি পট্টিতে তার চেম্বারে গিয়ে তা বন্ধ পাওয়া গেছে। তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।