আমি কে? -মোহাম্মদ শামছ উদ্দিন
চৌরাস্তার মাঝখানে তীর হাতে দাড়িয়ে,
বাম দিকে দীর্ঘ কাদা-মাখা পথ,
ডান দিকে দিগন্ত বিস্তৃত সবুজের হাতছানি?
সামনে আলোমাখা মায়ামুগ্ধ এক ছায়াপথ,
পিছনে সফেদ সারিবদ্ধ শবযাত্রা,
উপরে কাগজকলম হাতে মোহরি দাঁড়িয়ে?
ছায়াপথের জনস্রোত যেন ভ্রুক্ষেপহীন,
ছুটছে সবাই, ট্রেন চলে যাচ্ছে,
হুইসেলের শব্দ স্পষ্টই শুনতে পাচ্ছি?
হঠাৎ দেখি নির্বিকার এক লোক,
ধনুক কাঁধে ঝুলিয়ে ছুটছে হন্তদন্ত,
কাধের ঝুলিতে সময়বন্দি আর ট্রেন ছাড়ছে?
আমি তাঁকে স্পষ্ট করে ই ডাকলাম,
ভাই ক্ষনেক তরে একটু দাঁড়ান,
একটা ধনুক কিনবো বলে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছি?
খুচরো পয়সার খোঁজে পকেটে হাত ঢুকাতে ই,
ঠেকলো একটা সাদা কাগজ,
ভাঁজ খুলে দেখি কেবল সাদা-শূণ্যতা?
বুদ্ধুদেব নামে কে একজন বলেছিল,
মাঝে মাঝে শুধু পাতা থাকবে সাদা,
সেও নাকি থাকবে বলেছিল?
বুকপকেটের কলম নিয়ে লিখতে শুরু করবো,
দেখি কালিশূন্য ঝর্না কলম দিয়ে,
ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরুচ্ছে?
চোখ তুলে দেখি দিগন্তে তাঁর অপসৃয়মান দেহ,
আর সামনে পড়ে আছে একটা শব,
এটা কে? এটা কি আমি? তাহলে আমি কে?
তাহলে আমি কি আমাকে ই দেখছি?
আমি কি এক অশরীরী আত্মা?
আমার চারপাশে আতর লোবানের গন্ধ কেন?
আধো স্বপ্ন আধো জাগরণে এক মমতাময়ী কন্ঠ,
খোকা ফিরে আয়, খোকা ফিরে আয়,
জেগে দেখি অনন্ত-অসীমে এক মহাকলোরহ?
সময়ের সিঁড়ির শেষ প্রান্তে মা দাঁড়িয়ে,
সবসখীগন সহাস্য কলধ্বনিতে মুখরিত,
মাতৃকোলে মৃত্যূঞ্জয়ী বয়োবৃদ্ধ এক শিশু বালক?
(২৪ নভেম্বর-২০২০, পায়রা, মুহিবুর রহমান একাডেমি)
(অনুপ্রেরণায় কবি মুহম্মদ ইমদাদ এর ‘পৃথিবীর বাহিরে থেকে ফোন ধরতে পারিনা’)