একজন রনি ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক, ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকও!
বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ
মো. রায়হান রনি (২৩)। তিনি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা পৌরসভার আলফাডাঙ্গা মৌজার বাসিন্দা। পড়াশোনা করেন যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে। অভিযোগ উঠেছে, তিনি আলফাডাঙ্গা পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক পদে থাকা অবস্থাতেই পৌর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ পেয়েছেন।
ছাত্রদল ও ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ছয় মাস আগে গত ২৩ জানুয়ারি জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সৈয়দ আদনান হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হাসান ২১ সদস্যবিশিষ্ট আলফাডাঙ্গা পৌর ছাত্রদলের একটি আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেন। ওই কমিটির একজন আহ্বায়ক, নয়জন যুগ্ম আহ্বায়ক, একজন সদস্যসচিব এবং বাকি সবাই সদস্য। ঘোষিত ওই কমিটির ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছে রায়হান রনির নাম।
অপর দিকে ১২ জুন আলফাডাঙ্গা পৌর ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি অনুমোদন করা হয়। ঘোষিত পৌর ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক—এই তিন সদস্যবিশিষ্ট। দলীয় প্যাডে স্বাক্ষর দিয়ে এ কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমেদ। ঘোষিত ওই পৌর কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে রয়েছে মোহাম্মদ রায়হান রনির নাম।
এলাকার অন্তত সাতজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছাত্রদলের রায়হান রনি ও ছাত্রলীগের মোহাম্মদ রায়হান রনি একই ব্যক্তি। চাতুর্যের কারণে নামটি দুই জায়গায় ভিন্নভাবে ব্যবহার হয়েছে মাত্র।
এ নিয়ে মোহাম্মদ রায়হান রনির ভাষ্য, তিনি আজীবন ছাত্রলীগ করেছেন, ছাত্রদল তিনি করেননি। তিনি ও ছাত্রদলের রায়হান রনি এক ব্যক্তি নন। তবে ছাত্রদলের রায়হান রনি নামের কাউকে তিনি চেনেন না এবং এ নামে আলফাডাঙ্গায় কেউ আছেন বলেও তাঁর জানা নেই। রায়হান বলেন, ‘আলফাডাঙ্গায় কোনো ছাত্রদল নেই। ছাত্রদলের কাউকে খুঁজেও পাওয়া যাবে না। ওরা সবাই গর্তে ঢুকে গেছে।’
রায়হানের ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের কমিটিতে থাকার অভিযোগ ওঠায় তদন্ত শুরু করেছে জেলা ছাত্রদল। সংগঠনের সভাপতি সৈয়দ আদনান হোসেন বলেন, ‘আমাদের দলের একজন ‘‘ওই দুই ব্যক্তি একই ব্যক্তি’’, এমন প্রশ্ন তোলায় আমারা এ ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছি। তদন্তে সত্যতা প্রমাণিত হলে রায়হান রনির বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
সদ্য ঘোষিত আলফাডাঙ্গা পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি পদ পাওয়া রায়হান আজিজ খান বলেন, তিনি যত দূর জানেন, তাতে রায়হান রনি ছাত্রলীগের সঙ্গে ছিলেন। অন্য দলের সঙ্গে জড়িত কি না, তা তিনি জানেন না। জেলা ছাত্রলীগ কমিটি দিয়েছে, তারাই বিষয়টি ভালো বলতে পারবে।
উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি আবদুল্লা আল মিলন বলেন, ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের রায়হান রনি একই ব্যক্তি। রায়হান পৌর ছাত্রদলের কমিটির ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি বলেন, তবে রায়হানের চাচা যুবলীগ করেন, এ জন্য ছাত্রলীগের কমিটি যখন হয়, তখন তাঁর ভাতিজাকে ছাত্রলীগে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। কীভাবে যে ছাত্রদল নেতা রাতারাতি ছাত্রলীগের নেতা হয়ে গেলেন, তা তিনি বুঝতে পারছেন না।
ছাত্রদলের কমিটির রায়হান রনী ও ছাত্রলীগের কমিটির মোহাম্মদ রায়হান রনী একই ব্যক্তি—দাবি করে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. এনায়েত হোসেন বলেন, কৌশলগত কারণে নাম ছোট কিংবা বড় করে লিখে থাকতে পারেন তিনি। এ ঘটনায় দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। বিষয়টি আওয়ামী পরিবারের কেউ সুনজরে দেখছে না।