কুমারগাঁওয়ে অগ্নিকাণ্ডঃ পুরো সিলেটে আজও স্বাভাবিক হচ্ছে না বিদ্যুৎ ব্যবস্থা!
বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ
সিলেটের কুমারগাঁও উপকেন্দ্রে মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) সকাল সোয়া ১১টায় ঘটা ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ৩১ ঘণ্টা পর সিলেট মহানগরীর কিছু অংশে বিদ্যুৎ বিতরণ শুরু করে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এবং পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি (পিজিসিবি)। অগ্নিকাণ্ডের পরদিন বুধবার (১৮ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে প্রথম বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় নগরীতে।
এদিকে, সিলেটে আজও পুরোপুরি স্বাভাবিক হচ্ছে না বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। গতকাল রাতে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র আজ (বৃহস্পতিবার ) সন্ধ্যার দিকে সিলেটে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পুরোপুরি স্বাভাবিক হওয়ার আশ্বাস দিলেও ঘোষিত সময় পর্যন্ত মেরামত কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় এটি সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন পিডিবি’র ডিভিশন-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরেফিন।
তিনি বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জানান, অগ্নিকাণ্ডের ৩১ ঘণ্টা পর বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে সিলেট মহানগরীতে বিদ্যুৎ বিতরণ শুরু করে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এবং পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি (পিজিসিবি)। এসময় কিছু অংশে বিদ্যুৎ আসলেও রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিদ্যুৎ বিভাগের ডিভিশন ১, ২ ও ৪-এর আওতাধীন বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে।
মো. আরেফিন বলেন, আমরা আশা করেছিলাম বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে মেরামত কাজ সম্পন্ন হবে এবং পুরো সিলেটের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কিন্তু অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আশা করছি কাল (শুক্রবার) দিনের বেলা সিলেটে পুরোপুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হবে।
আজও (বৃহস্পতিবার) বিদ্যুৎ বিভাগের প্রায় ২শ কর্মী ক্ষতিগ্রস্ত জায়গায় কাজ করছেন বলে তিনি জানান।
এদিকে, মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১১টা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৫৫ ঘণ্টা নগরীর অর্ধেক এলাকার মানুষ বিদ্যুৎহীন অবস্থায় চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন। সিলেট নগরী বিদ্যুৎহীন হওয়ার পর (মঙ্গলবার) থেকেই মধ্যে পানির জন্য প্রতি বাসায় শুরু হয় হাহাকার। কোথাও কোথাও পাড়ার দোকানগুলোতে পয়সা দিয়েও মিলছে না পানি। পানির অভাবে নগরীর ঘরে ঘরে সাংসারিক কাজকর্ম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। গত দুইদিন রাতে পানির অভাবে অনেক গৃহিনী চুলায় রান্না বসাতে পারেননি। দোকান থেকে শুকনো খাবার কিনে নিয়ে এসে রাত পার করেছেন।
মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) সকাল সোয়া ১১টার দিকে সিলেটের কুমারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পাওয়ার গ্রিড (পিজিসিবি) ১৩২/৩৩ কেভি বিদ্যুৎ সরবরাহ উপকেন্দ্রে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরে দমকল বাহিনীর ৭টি ইউনিট একঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও দু’টি উচ্চ ক্ষমতার ট্রান্সফরমার, সার্কিট ব্রেকার, কন্ট্রোল প্যানেল পুড়ে গিয়ে পুরো সিলেট নগরীসহ সিলেট, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলার বেশ কিছু এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগুনে ৭০ কোটি টাকা মূল্যের ২৫/৪১ এমবিএ দু’টি ট্রান্সফর্মার পুড়ে গেছে। সেই সঙ্গে ৩৩ কেভি ফিডার ও বার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে সিলেট, ফেঞ্চুগঞ্জ, ছাতক, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জসহ আশপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে সিলেট মহানগরী ও শহরতলি ছাড়া বাকি সব এলাকায় বিকল্প ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।
এদিকে, অগ্নিকাণ্ডের ৩১ ঘণ্টা পর বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে সিলেট মহানগরীতে বিদ্যুৎ বিতরণ শুরু করে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এবং পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি (পিজিসিবি)। বুধবার রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিভাগের ডিভিশন ১, ২ ও ৪-এর আওতাধীন বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে।
এলাকাগুলো হচ্ছে- নগরীর আম্বরখানা, জিন্দাবাজার, মিরাবাজার, উপশহর, নয়াসড়ক, কুমারপাড়া, সুবহানীঘাট, কাজিটুলা, বালুচর, টিলাগড়, জালালাবাদ, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সুবিদবাজার, আখালিয়া ও মদিনা মার্কেটসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকা।
পরে বৃহস্পতিবার বিকেলেরে দিকে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।