চুরি করে অঢেল সম্পদ ও পাঁচ শতাধিক ট্রাক পিকআপের মালিক সিলেটের সাহেদ
বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ
সড়ক-মহাসড়কে গাড়ি থেকে পণ্যচুরির ঘটনায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মো. সাহেদ ওরফে সাঈদ নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তার গড়ে তোলা চক্রটি গত ১০ বছরে পাঁচ হাজারেরও বেশি চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে দাবি করেছে পুলিশ।
গোয়েন্দা পুলিশের দেওয়া তথ্য মতে, সাহেদের বাড়ি সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলা সদরে। তার বাবার নাম আসিফ মিয়া। সাহেদ দুটি বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রী হোসনে আরা সন্তানসহ লন্ডনে থাকেন। দ্বিতীয় স্ত্রী রোকসানা আরা দেশে থাকেন। তার এক মেয়ে ও তিন ছেলে রয়েছে। মৌলভীবাজার শহরে তার মালিকানাধীন বিশাল ভবন রয়েছে।
সাহেদের রয়েছে পাঁচ শতাধিক ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও পিকআপ। এসব যানবাহন তিনি গার্মেন্টস পণ্য শিপমেন্টের কাজে ভাড়ায় ব্যবহার করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে গার্মেন্টস পণ্য পরিবহনে যুক্ত। নিজের ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ব্যবহার করে এবং এজেন্সি, চালক ও শ্রমিকদের সহায়তায় সংঘবদ্ধ চোরাই চক্র নিয়ন্ত্রণ করতেন সাহেদ।
গোয়েন্দা পুলিশ আরও জানিয়েছে, সাহেদ প্রতিটি চুরি থেকে ৫০ হাজার টাকা ভাগ পেতেন। আর এই টাকা তিনি বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লেনদেন করতেন।
চুরির টাকায় কোটিপতি সাহেদ নিয়মিত দান-খয়রাত করতেন। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ৩৫টির বেশি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ মামলায় পলাতক আসামি হিসেবে তার নাম রয়েছে।
গত ১১ মে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের জয়ন্তি নিট ওয়্যার লিমিটেড নামে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক একটি প্রতিষ্ঠান ২৮ হাজার ৮২০ পিস পণ্য শিপমেন্ট করতে চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশে পাঠায়।
বিদেশে মালামাল পৌঁছার পর জানা যায়, ওই শিপমেন্টে ১১ হাজার পণ্য কম। এজন্য বিদেশি বায়ার প্রতিষ্ঠানটিকে ২৮ হাজার ৯০৮ ডলার জরিমানা করেন। এতে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়।
ওই ঘটনায় গত ১৭ সেপ্টেম্বর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি মামলা দায়ের করে গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইমরান মোবারক ও ইব্রাহিম নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।
এদিকে গত ১৫ সেপ্টেম্বর নেটওয়ার্ক ক্লোথিং লিমিটেড নামক একটি গার্মেন্টস ১৪৩১ কার্টুনে মোট ১৭ হাজার ১৫২ পিস পোশাক বিদেশে রপ্তানির উদ্দেশে চট্টগ্রাম বন্দরে নিয়ে যায়। শিপমেন্টের সময় গণনাকালে ৫০০০ পিস মাল কম পাওয়া যায়। ওই ঘটনায় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি মামলা হয়।
তেজগাঁও জোনাল টিম সিসিটিভি ফুটেজ ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ঢাকা মহানগরের উত্তরা এলাকা থেকে চোরাই গার্মেন্টস মালামাল ও একটি কাভার্ডভ্যানসহ রাজ্জাক, ইউসুফ, খায়রুল ও মাইনুলকে গ্রেপ্তার করে। তাদের দেওয়া তথ্যমতে, কুমিল্লার বুড়িচং থানার নিমসার এলাকা থেকে চোরাই গার্মেন্টস মালামাল ও একটি কাভার্ডভ্যানসহ আল-আমিন ও দুলালকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যমতে পুরো চক্রের মূলহোতা মো. সাহেদ ওরফে সাঈদ ওরফে সিলেটি সাহেদকে গ্রেপ্তার করা হয়।