পর্যটনকেন্দ্র খোলার পর টাঙ্গুয়ার হাওরের সৌন্দর্য উপভোগে ছুটছেন পর্যটকরা
বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ
গত বছর থেকে করোনায় ধুঁকছে সিলেটসহ সারাদেশের পর্যটন। সংশ্লিষ্টদের দাবি, এ খাতে লোকসানের পরিমাণ কয়েক হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
এ অবস্থায় প্রায় সাড়ে চার মাস পর বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) থেকে শর্ত সাপেক্ষে খুলছে সিলেটসহ সারাদেশের পর্যটনকেন্দ্রগুলো। এতে একদিকে করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর শঙ্কা আর অন্যদিকে অর্থনৈতিক সংকট ভাবাচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। ইতোমধ্যে হোটেল-মোটেল ও রেস্তােরাঁগুলো পরিচ্ছন্নতা শেষে পর্যটন সেবার উপযোগী করা হয়েছে।
দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ১৯ আগস্ট থেকে পর্যটনকেন্দ্র খোলার অনুমতি দিয়ে গত ১২ আগস্ট মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
পর্যটনকেন্দ্রে পালনের জন্য তিনটি শর্ত আরোপ করা হয়েছে। সেগুলো হলো :
১. পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্র আসন সংখ্যার শতকরা ৫০ ভাগ ব্যবহার করে চালু করতে পারবে।
২. সকলক্ষেত্রে মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর প্রণীত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
৩. যেকোনো প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে অবহেলা পরিলক্ষিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব বহন করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সিলেটের বিভিন্ন রিসোর্ট ও বিনোদনকেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, পরিচ্ছন্ন করে দর্শনার্থীদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে এসব স্থান। পর্যটক টানতে ফেসবুকে চালানো হচ্ছে প্রচারণা, দেওয়া হচ্ছে মূল্যছাড়ের ঘোষণা।
এদিকে, পর্যটনকেন্দ্র খোলার অনুমতির সঙ্গে শর্ত দেয়া হয়, পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্র ধারণ ক্ষমতার শতকরা ৫০ ভাগ ব্যবহার করে চালু করতে পারবে। এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন কেউ কেউ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন- ‘রিসোর্টে খোলামেলা পরিবেশ থাকে। এক রুম থেকে আরেক রুমের ডিস্টেন্স থাকে। ন্যাচার বেইজড পরিবশ আর খাবার দাবার মানসম্মত থাকে। রিসোর্ট পরিবেশবান্ধব। ৫০ শতাংশের নির্দেশনা মেইনটেইন করা কঠিন। কারণ অনেক রিসোর্টে পিকনিকসহ নানান অনুষ্ঠান হয়। সেখানে দর্শনার্থীদের মনিটর করা কঠিন।’
এদিকে, দীর্ঘ দুই মাস আটদিন পর খুলে দেওয়া হলো সুনামগঞ্জের সব পর্যটনকেন্দ্র। বৃহস্পতিবার সব পর্যটনকেন্দ্র স্বাস্থ্যবিধি মেনে উম্মুক্ত করে দেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।
বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ায় সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় অবস্থিত টাঙ্গুয়ার হাওর, নীলাদ্রি, টেকেরঘাট, বারেকটিলাসহ পর্যটন এলাকায় সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য ছুটছেন পর্যটকরা।
সারাদেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার বেড়ে যাওয়ায় গত ১১ জুন সুনামগঞ্জের সব পর্যটন এলাকায় জনসমাগমের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এরপর থেকে সৌন্দর্যের লীলাভূমি টাঙ্গুয়ার হাওরে ঘুরতে যেতে পারেননি পর্যটকরা। অনেকে লুকিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও তাদের গুনতে হয়েছে জরিমানা।
সারাদেশে পর্যটনকেন্দ্রের ওপর ১৯ আগস্ট থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার খবরে অনেক পর্যটক মঙ্গল ও বুধবার রাত থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হোটেলে উঠেছেন।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রায়হান কবির বলেন, ‘আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে সুনামগঞ্জের সব পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা চেষ্টা করব পর্যটকরা যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাওরের সৌন্দর্য উপভোগ করেন।’