বন্দর বাজার ফাঁড়ির সিসিটিভি’র ফুটেজ মুছে দেয় এসআই আকবর
বিয়ানীবাজারের ডাকঃ
দরোগা আকবর কোথায়? এ প্রশ্নটি যেমন সাধারণ মানুষের তেমনি পুলিশেরও! পুলিশও জানে না সে কোথায় আছে। তবে বাকীরা পুলিশের হেফাজতে আছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। কিন্তু তাদের কেন গ্রেফতার দেখানো হচ্ছেনা সেটা নিয়ে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন।
তবে অভিযুক্ত আকবরের সম্পর্কে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঘটনার দিন দুপুর পর্যন্ত সাদা পোশাকে ফাঁড়িতেই ছিলো দরোগা আকবর ভূঁইয়া। ওই সময়ে তড়িগড়ি করে ঘটনার সব আলামত নষ্ট করে ফেলে। এমনকি সিসি টিভির ফুটেজও মুছে দেয় সিলেটী নাটকের হিরো আকবর।
এসআই আকবর ‘হাওয়া’ হয়ে যাওয়ার পর সন্ধানে নামে পুলিশ। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার বেড়তলায় অভিযান চালানো হয়। সেখানেও তাকে পাওয়া যায়নি। আকবর এখন কোথায় আছে সেটি জানেন না সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ।
এদিকে, রায়হান পুলিশ হেফাজতে মারা যাওয়ার চারদিন পর মুখ খুললেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার গোলাম কিবরিয়া। তিনি বৃহস্পতিবার রাতে গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, এসআই আকবর ছাড়া রায়হান হত্যার ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত ও প্রত্যাহার হওয়া সকল পুলিশ সদস্যরা পুলিশ হেফাজত রয়েছে।
সুত্র জানায়, বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে রয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। গত শনিবার ফাঁড়িতে নির্যাতনে যুবক রায়হানের মৃত্যুর পর তড়িঘড়ি করে খুনের সব আলামত নষ্ট ও সিসি টিভির ফুটেজও মুছে দেয় দরোগা আকবর। আর এ কাজে সহায়তা করেছে তাঁর এক ঘনিষ্ট বন্ধু। আকবরের ওই বন্ধু ফাঁড়িতে থাকা সিসিটিভির ওই ফুটেজ নষ্ট করে ফেলে। এমনকি হার্ডডিস্কও সরিয়ে নতুন হার্ডডিস্ক বসানো হয়। এরপর মোবাইল ফোনসহ যোগাযোগের সব মাধ্যম বন্ধ করে আকবর চলে যায় আত্মগোপনে। এ কারণে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সিসিটিভির ফুটেজে কিছুই পাননি।
পুলিশের একটি সুত্র জানায়, দরোগা আকবর লাপাত্তা হওয়ার আগে ‘গণপিটুনির’ কথা পুলিশের ঊর্ধ্বতনরা বিশ্বাস করেছিলেন। গুরুতর আহত হলে রায়হানকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়। তখন সে ফাঁড়িতে নিয়ে আসার কথা অস্বীকার করে। কিন্তু ঘটনা ছিলো তাঁর পুরো উল্টো। তবে শেষ রক্ষা হয়নি দরোগা আকবরের। ফাঁড়ির পার্শ্ববর্তী জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের গেইটের সিসিটিভির ফুটেজে ধরা পড়ে ঘটনা। এরপর আকবরের সহযোগী এক পুলিশ সদস্য ঘটনাটি স্বীকার করে। বলে, সাদা পোশাকে আকবরের নেতৃত্বেই ধরে আনা যুবক রায়হানকে নির্যাতন করা হয়। রায়হানকে আকবর নির্যাতন করে যখন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন অপর পুলিশ সদস্যরা নির্যাতন করছিলো তখন নির্যাতনকারী ওই পুলিশ সদস্যকে ‘বাহবা’ দেন আকবর। মাত্র ১০ হাজার টাকার জন্য রায়হানের হাত ও পায়ের নখ উপড়ে ফেলাসহ নানা নির্যাতন চালানো হয়। নির্যাতনের সময় ফাঁড়ির ভেতর থেকে চিৎকারের শব্দ শুনতে পান প্রতিবেশীরা। রায়হানের চিৎকারে পার্শ্ববর্তী কুদরত উল্লাহ রেস্ট হাউজের বাসিন্দারাও সেই চিৎকার শুনেছে।