বিয়ানীবাজারে এক যুবকের মিথ্যা তথ্যে বিব্রত পুলিশ ও জাতীয় সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান
বিয়ানীবাজারের ডাকঃ
বিয়ানীবাজারের পল্লীতে পুলিশসহ অন্যান্য সেবাদানকারী প্রতিষ্টানকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিব্রত করছে এক যুবক। সে একাধিকবার গুরুত্বপূর্ণ সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্টানে ফোন করে মিথ্যা তথ্য দেয় এবং এলাকায় গুজব রটায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
থানা পুলিশ জানায়, এক ব্যক্তি ভুয়া পরিচয় দিয়ে ফোন করে তিলপাড়া ইউনিয়নের পিরেরচক গ্রামে খুন হয়েছে- এরকম ভুল তথ্য দেয় পুলিশকে। সোমবার রাতে উপজেলার তিলপাড়া ইউনিয়নের পিরেরচক বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, গত সোমবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলার তিলপাড়া ইউনিয়নের পিরেরচক এলাকার জনৈক ব্যক্তি রবি অপারেটরের একটি সিম (০১৮১৫-৭৯২৬১৬) নম্বর থেকে জরুরি সেবার হটলাইন ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেন। ওই ব্যক্তি মুঠোফোনে জানান, ওইদিন সন্ধ্যায় তাদের গ্রাম্য একটা সালিশী বৈঠকে কথা কাটাকাটির জেরে একজন খুন হয়েছেন, আপনারা তাড়াতাড়ি আসুন। সংবাদ পেয়ে তিনি বিয়ানীবাজার থানার এসআই মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান। কিন্তু তিনি স্থানীয় এলাকাবাসীর সাথে আলাপ করেও অভিযোগের কোনো সত্যতা পাননি।
গ্রামবাসীর সাথে আলাপ করে জানা গেছে, বছরখানেক পূর্বে একইভাবে আরেকটি ঘটনা ওই এলাকায় একবার ঘটেছিল। পিরেরচক বাজারে আগুন লেগেছে জানিয়ে বিয়ানীবাজার সিভিল এন্ড ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে এরকম একটি খবর দিয়ে হয়রানি করে স্থানীয় গ্রামের জনৈক এক ব্যক্তি। পরে গ্রাম্য সালিশে বিষয়টি সামাজিকভাবে নিস্পত্তি হয়।
এদিকে, বছর পার হতে না হতেই একই ব্যক্তি আবারও একই ধরনের কাণ্ড পুনরাবৃত্তি হওয়ায় স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাতক্ষনিক উত্তেজিত এলাকাবাসীকে শান্ত করতে খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে যান তিলপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান। এসময় তার সাথে কুড়ারবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এএফএম আবু তাহেরসহ স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। পরে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসবেন জানিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীকে দুই জনপ্রতিনিধি ও থানা পুলিশ শান্ত করেন।
জনপ্রতিনিধি ও পুলিশের উপস্থিতিতে স্থানীয় এলাকাবাসী এরকম নোংরা ও ভুয়া খবর দিয়ে এলাকার সুনাম নষ্ট করার পাশাপাশি পুলিশ ও গ্রামবাসীকে যে বা যারা হয়রানি করেছে অবিলম্বে তাকে বা তাদেরকে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান।
তিলপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রতিটি জনগনকে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করা উচিত। তবে বিষয়টির সত্যতা থাকবে। তিনি বলেন, পিরেরচক গ্রামের ঘটনাটি ভুয়া ও ভিত্তিহীন। এই বিষয়টি এখন থানা পুলিশ দেখবে। এসময় তিনি অভিযোগকারীর নম্বর ও অবস্থান শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসার অনুরোধ জানান।
এ ব্যাপারে বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিল্লোল রায় বলেন, জরুরি সেবার হটলাইন ৯৯৯-এ ফোন করে ভুয়া তথ্য প্রদান করা হয়েছে। আমরা দ্রুত এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনানুগ প্রদক্ষেপ গ্রহণ করবো। তিনি আরও বলেন, মাঝে মধ্যে কিছু লোক বিনা কারণেই জরুরি সেবা ৯৯৯–এ ফোন করে অভিযোগ করেন। পুলিশ মাঠে গিয়ে বেশির ভাগ অভিযোগ মিথ্যা পায়। এমনকি অভিযোগ করার পর অভিযোগকারী ফোন বন্ধ করে দেন। এতে পুলিশের দায়িত্ব পালনে ব্যাঘাত ঘটে।