বিয়ানীবাজার সরকারী কলেজের “গ্যালারি অব একসেলেন্স” নিয়ে সমালোচনার ঝড়! ছবি অপসারনের দাবী উপজেলা চেয়ারম্যানের
সজীব ভট্টাচার্য্য
বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের গ্যালারি অব একসেলেন্স নিয়ে বিভিন্ন সুধী মহলে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক দ্বারকেশ চন্দ্র নাথ-এর বিদায়ের প্রাক্কালে গ্যালারি অব একসেলেন্স উদ্বোধন করেন। এতে বিয়ানীবাজার কলেজের সৃষ্টিলগ্ন থেকে যাদের অবদান রয়েছে সেই গুণী ব্যক্তিদের নাম ও ছবি না থাকায় সুধী মহলে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সুধী জনের মতামত বিয়ানীবাজার কলেজের জন্য যাদের অবদান রয়েছে তাদের নাম গ্যালারি অব একসেলেন্সে অর্ন্তভূক্ত করা হউক। বিয়ানীবাজার সরকারী কলেজের সাবেক শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষক অধ্যাপক মিহির পাল চৌধুরীর পুত্র অমিতাব পাল চৌধুরীর পোষ্ট থেকে জানাযায়, বিয়ানীবাজার সরকারী কলেজের ইতিহাস সর্ম্পকে । কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬৮ ইংরেজীতে। প্রতিষ্ঠাকালীন নাম ছিল বিয়ানীবাজার মহাবিদ্যালয়।
বিয়ানীবাজার তথা পঞ্চখণ্ডের গৌরব শ্রী প্রমথ নাথ দাস। এলাকার কিছু সুধী ব্যাক্তি কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছেন শুনে বিদ্যানুরাগী এই সাহসী ব্যাক্তিটি এগিয়ে এলেন সকলের আগে। কলেজের জন্য দান করেন প্রথমে ০১ একর ভূমি ও পুকুর। পরবর্তীতে কলেজের এফিলিয়েশনের প্রয়োজনে দান করলেন আরো ৫ একর ভূমি এবং তাঁর নিজস্ব লাইব্রেরীর সমস্ত বই ও আসবাবপত্র। কলেজটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে যারা ঐ সময় অক্লান্ত শ্রম দিয়েছেন তারা হলেন- হাজী আব্দুর রহিম বচন হাজী ( নবাং), হাজী আব্দুর রকিব ( শ্রীধরা), হাজী সহিব আলী ( কসবা), মবারক আলী উকিল ( কসবা), আব্দুল আজিজ ( কসবা), আব্দুল লতিফ ( শ্রীধরা), হাজী আব্দুল মালিক তাপাদার দুদু মিয়া ( মোল্লাগ্রাম), তাজউদ্দিন আহমদ ( শ্রীধরা), হাজী ছইদ আলী ( খাসারিপাড়া), মুজম্মিল আলী কালা মিয়া ( খাসারিপাড়া), আকাদ্দস সিরাজুল ইসলাম ( মাথিউরা), মুজম্মিল আলী (প্রধান শিক্ষক, বিয়ানীবাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়), হাজী কুতুব উদ্দিন ( কোনাগ্রাম), শেখ ওয়াহিদুর রহমান (খাসারিপাড়া), আব্দুস সাত্তার ( খাসা), হাছন আলী চৌধুরী ( প্রধান শিক্ষক, হরগোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয়), ফৈয়াজ মিয়া ( বড়দেশ)…… প্রমুখ।
প্রতিষ্ঠাকালীন অধ্যক্ষ ছিলেন মো ইমদাদুর রহমান ( মালিগ্রাম) এবং কলেজের প্রতিষ্ঠাকালীন সেক্রেটারী ছিলেন হাজী সহিব আলী সইবন মিয়া ( কসবা)।
মানবিক ও বানিজ্য শাখায় মোট ৪৬ জন ছাত্র-ছাত্রী ও ০৫ জন শিক্ষক নিয়ে শুরু হয়েছিল কলেজের শুভ অগ্রযাত্রা।
এ ব্যাপারে বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব গতকাল শনিবার এক ভিডিও বার্তায় উনার বক্তব্য তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, গ্যালারী অব এ্যাক্সিলেন্সে ব্যবহৃত বেশীরভাগ ছবি নিয়ে দেশে বিদেশে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। কলেজের প্রতিষ্টাতা অনেকের ছবি এ্যাক্সিলেন্সে স্থান পায়নি। কলেজের উন্নয়নে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এম পির যথেষ্ট অবদান রয়েছে, উনার ছবি লাগানো সঠিক হয়েছে। কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ অধ্যাপক দ্বারকেশ চন্দ্র নাথকে পক্ষপাতদুষ্ট বলে অভিহিত করে তিনি অভিলম্বে গ্যালারী অব এ্যাক্সিলেন্স’ এ ব্যবহৃত ছবিগুলো খুলে নেয়ার দাবী জানান।
বিয়ানীবাজার উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক আব্দুল বারী বলেন, বিয়ানীবাজার সরকারী কলেজের কোন কাঠামোর মধ্যে পড়ে এই ছবিগুলো টানানো আমার জানা নেই। এই কলেজের গন্ডির ভীতরে প্রতিষ্ঠা থেকে যাদের অবদান রয়েছে তাদের কেন মূল্যায়ন করা হলো না। আমি এই গ্যালারী অব এ্যাক্সিলেন্স মেনে নিতে পারছিনা। এটা সংশোধন করা ইউক।
সিলেট রাজা জি.সি.হাই স্কুল প্রধান শিক্ষক ও বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি সিলেট জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল মুমিত বলেন, যাদের অবদানে বিয়ানীবাজার কলেজ সৃষ্টি হয়েছে তাদের নাম দিয়ে গ্যালারি অব একসেলেন্স করা উচিত ছিল। দ্বারকেশ চন্দ্র নাথ আমাদের প্রিয় শিক্ষক। এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেবার আগে স্যারের উচিত ছিল বিয়ানীবাজারের সুধীজনকে নিয়ে বসার। তাহলে আজকে তিনি এই সমালোচনার মধ্যে পড়তেন না।
আজ ২৮ জুন অবসরে যাচ্ছেন বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক দ্বারকেশ চন্দ্র নাথ। এ ব্যাপারে উনার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি গ্যালারী অব এ্যাক্সিলেন্স নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
।