সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্ক:

সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় শিলাবৃষ্টিতে পাকা ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এদিকে শিলাবৃষ্টিতে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের প্রত্যেকটি ঘরের টিনের চাল ফুটো হয়ে গেছে।

ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় রোববার দিবাগত রাতে ভারি শিলাবৃষ্টিসহ ঝড় হয়েছে। এতে আগাম জাতের বোরো ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।

ওই দিন রাত ২টার দিকে হঠাৎ শিলাবৃষ্টিসহ ঝড় শুরু হয়। প্রায় ১০ মিনিটের শিলাবৃষ্টিতে ফেঞ্চুগঞ্জ সদর, মাইজগাঁও, ঘিলাছড়া, উত্তর কুশিয়ারা, উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়নসহ হাকালুকি হাওড় এলাকার বোরো ফসলের ক্ষতি হয়।

হাকালুকি হাওরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানান বাদেদেউলী গ্রামের আজিজ মিয়া। তিনি বলেন, ওই হাওড়ে আমার এক একর জমির ধান প্রায় পেকে এসেছিল। চার-পাঁচ দিনের মধ্যে কাটা পড়ত কিন্তু শিলাবৃষ্টিতে ধানের খুব ক্ষতি হয়ে গেছে।

একই হাওড়ের কৃষক তাজিম উদ্দিন ও নিয়াজ আলী তাদের জমির উঠতি ফসলের ক্ষয়ক্ষতির কথা জানিয়েছেন। উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ, উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়নের বিভিন্ন বিলে ও হাওর ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় বোরো ধান আবাদ করা হয়েছিল চার হাজার ৩০ হেক্টর। এর মধ্যে শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুই হাজার ৭৯৪ হেক্টর ফসলি জমি। সবজি আবাদ করা হয়েছে ৪৬০ হেক্টর জমিতে৷ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৬৮ হেক্টর সবজি ক্ষেত।

বাঘমারা গ্রামের আমির উল্ল্যা বলেন, আমি এবার এক একর বোরো ধান আবাদ করেছিলাম। ধান পাকা শুরু হওয়ায় কয়েক দিনের মধ্যেই কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এর মধ্যেই শিলাবৃষ্টিতে খেতের বেশির ভাগ ধানই পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এখন সারা বছর চলবে কিভাবে খুব দুশ্চিন্তায় আছি।

এদিকে শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেকটি ঘরের টিনের চাল ফুটো হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বসতঘর।

উত্তর ইসলামপুর গ্রামের এনাম আহমদ বলেন, এত বড় বড় শিলা আর কখনো পড়তে দেখিনি। বড় শিলার আঘাতে অনেকেই মাথায় আঘাত পেয়েছেন। আর ঘরের চালের যেখানেই ওই শিলা পড়েছে সেখানেই ফুটো হয়ে গেছে।

ইউপি সদস্য আবদুস ছামাদ বলেন, শিলাবৃষ্টিতে টিনের ঘরের চালা ফুটো হয়ে গেছে। বিশেষ করে বোরো ধান, আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ বছর কৃষকদের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠায় মুশকিল হয়ে পড়বে।

ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুব্রত দেবনাথ বলেন, শিলাবৃষ্টিতে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হচ্ছে।

ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা প্রিয়াংকা বলেন, শিলাবৃষ্টিতে ফসলি জমিসহ বেশ কয়েকটি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরেজমিন গিয়ে পরিদর্শন করছি। ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারিভাবে সহায়তা করা হবে।

 

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *