সিলেটে ১৪ মার্চ থেকে চলবে না যানবাহন!
বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ
সিলেটের চৌহাট্টায় অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে পরিবহন শ্রমিক-সিসিক-পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় দায়েরকৃত ৩টি মামলা প্রত্যাহারসহ তিন দফা দাবি মানা না হলে আগামী ১৪ মার্চ সকাল থেকে পরিবহন শ্রমিকরা সিলেট জেলায় অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করবেন।
শনিবার (৬ মার্চ) বেলা ২টায় হুমায়ুন রশিদ চত্বরে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস-কোচ-মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম এ কর্মবিরতি পালনের কথা বলেন।
তিনি বলেন, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি চৌহাট্টায় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বিনা নোটিশে স্ট্যান্ড উচ্ছেদের নামে লোকজন নিয়ে হামলা করে আমাদের শ্রমিকদের অনেক গাড়ি ভাঙচুর করেন ও আমাদের ওপর হামলা করেন। আমরা বাঁচার তাগিদে তাৎক্ষণিক দক্ষিণ সুরমায় সড়ক অবরোধ করেছিলাম। কিন্তু পুলিশ কমিশনার নিশারুল আরিফের দেওয়া আশ্বাসের ভিত্তিতে আমরা অবরোধ তুলে নিই। কিন্তু পরবর্তীতে সিসিকের মামলা গ্রহণ করা হলেও আমাদের মামলা গ্রহণ করেনি পুলিশ। তারপরও গত ২১ তারিখে আমরা সিটি কর্পোরেশনে বৈঠকে বসি। সেখানে আমাদের গাড়ির ক্ষতিপূরণ দেওয়ার এবং আমাদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের আশ্বাস প্রদান করা হয়। কিন্তু এ পর্যন্ত সিসিক মেয়র ও পুলিশ কমিশনার এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেননি। যার কারণে আমরা আবারও রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি।
মেয়র আরিফ ও পুলিশ কমিশনার নিশারুল আরিফের উদ্দেশে মানববন্ধনে এ শ্রমিক নেতা বলেন, আপনারা আমাদের বিষয়টি দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করুন। না কি আপনারা আমাদের সঙ্গে লাগার চেষ্টা করছেন? এমন যদি করেন, তবে আমরা পরিবহন শ্রমিকরা রাজপথে পড়ে থাকব, রাজপথ ছেড়ে যাব না। আগামী ১৩ মার্চ রাতের মধ্যে আপনারা এ বিষয়টি যদি সমাধান না করেন, তবে ১৪ মার্চ সকাল থেকে পরিবহন শ্রমিকরা সিলেট জেলায় অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করবে। এর পরেও সমাধান না হলে পর্যায়ক্রমে সিলেট বিভাগ, এমনকি সারা দেশের গাড়ির চাকা বন্ধ করতে বাধ্য হব আমরা।
এর আগে গত ৩ মার্চ সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেন পরিবহন শ্রমিক নেতারা। স্মারকলিপিতে পরিবহন শ্রমিকদের পক্ষ থেকে তিনটি দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হচ্ছে- কোতোয়ালি থানায় শ্রমিক ও নেতৃবৃন্দের উপর দায়ের করা মিথ্যা মামলাদ্বয় প্রত্যাহার, ভাঙচুরকৃত গাড়ির ক্ষতিপূরণ ও আটককৃত গাড়ি ফেরত দেওয়া এবং গাড়ি রাখার জন্য স্ট্যান্ডের ব্যবস্থা করা।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ এপ্রিল অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে সিসিক ও পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশ, সিসিক’র শ্রমিক ও পরিবহন শ্রমিক মিলে অন্তত ৩০ জন আহত হন। আর অস্ত্রসহ আটক হক মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক ফয়সল আহমদ ফাহাদ।
ওই ঘটনার পরপর শ্রমিকরা কদমতলী এলাকায় গাড়ি পার্ক করে মহাসড়ক অবরোধসহ সকল মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে প্রায় ২ ঘন্টা ভোগান্তির পর অবরোধ সরিয়ে নিলেও গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ধর্মঘটের ঘোষণা দেন তারা। পরে সিসিক’রর সাথে আলোচনা শেষে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
এদিকে চৌহাট্টায় সংঘর্ষের ঘটনায় ২৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৩শ জনকে আসামি করে মোট ৩টি মামলা করা হয়। এর মধ্যে একটি মামলার বাদী সিসিক’র উপ-সহকারী প্রকৌশলি দেবপদ রায়। আর বাকি দু’টি মামলার বাদী পুলিশ। পুলিশ বাদী হয়ে দায়ের করা মামলা দু’টির একটি হলো পুলিশের ওপর হামলা ও অপরটি অস্ত্র আইনের মামলা।