হবিগঞ্জে ড্রেনে পাওয়া নবজাতক নিয়ে দুই পরিবারের টানাটানি
হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
হবিগঞ্জে পরিত্যক্ত ময়লার ড্রেনে খুড়িয়ে নবজাতককে নিয়ে এবার শুরু হয়েছে দুই পরিবারের টানাটানি। একদিকে শিশুটিকে নিজের কাছে রাখতে চান খুড়িয়ে পাওয়া জোসনা বেগম, অন্যদিকে নিজের ঔরষজাত সন্তান দাবি করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন এক কিশোরী। আর পুলিশ বলছে, আদালত শিশুটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
গত ৪ মে শহরের মোহনপুর এলাকার ময়লার ড্রেন থেকে একটি জিবিত ছেলে নবজাতক উদ্ধার করেন স্থানীয় লোকজন। পরে শিশুটিকে ওই এলাকার জোসনা বেগম নামে এক নারী হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসার পর ওই শিশুটি সুস্থ্য হয়ে উঠে। এরপর থেকে শিশুটি জোসনা বেগমের কাছেই রয়েছে।
এদিকে, শিশুটিকে উদ্ধারের চারদিন পর নিজের ঔরষজাত দাবি করেন এক অবিবাহিত কিশোরী (১৭)। গত ৮ মে শিশুকে নিজের কাছে পেতে এবং তার পিতৃপরিচয় চেয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। ওই কিশোরি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার চড়িপুর গ্রামের মো. আয়াত আলী মেয়ে ফারজানা আক্তার।
বুধবার (১২ মে) ওই কিশোরী অসুস্থ্যবোধ করলে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে তিনি জানান, জিবিকার তাগিদে তার মা, বাবা ও এক-বোন হবিগঞ্জ শহরের মোহনপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন। এ সময় ফারজানা আক্তার তার নানার বাড়ি ফান্ডাইল গ্রামে থাকত। সেখানে খাতার সুবাদে ওই গ্রামের দিলু মিয়ার ছেলে রুমান মিয়ার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।
প্রেমের সুবাধে রুমান মিয়া ফারজানাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে সে গর্ভবতী হয়ে পড়ে। এ সময় ভয়ে ও লজ্জায় কাউকে কিছু জানায়নি। কয়েক মাস আগে রুমান দুবাই চলে যায়।
সম্প্রতি ফারজানা হবিগঞ্জ শহরে তার মা বাবার কাছে আসে। এ সময় প্রকৃতির ডাকে বাড়িরে গেলে ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু এ সময়ও সে পরিবারের লোকজনকে কিছু না বলে ঘরে এসে ঘুমিয়ে পড়ে।
ফারজানার মা জানান, শিশুটিকে বাহিরে পেয়ে জোসনা আক্তার হাসপাতালে নিয়ে আসেন। কিন্তু এর দুইদিন পর মেয়ে ফারজানা তার মাকে সবকিছু খুলে বললে তারা শিশুটিকে ফিরে পাওয়ার জন্য থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে শিশুটিকে খুড়িয়ে পাওয়া জোসনা আক্তার বলেন, আমি শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেছি। এখন ফারজানা নামে এক মেয়ে বলছে শিশুটি নাকি তার। আমি শিশুটিকে লালন-পালন করতে চাই।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুক আলী বলেন, ‘ফারজানা নামে এক কিশোরী শিশুটি নিজের সন্তান দাবি করে থানায় লিখিত দিয়েছেন। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।’