অবশেষে চিরবিদায় নিলেন মোহাম্মদ নাসিম
শেষ পর্যন্ত মৃত্যুকেই বরণ করতে হলো মোহাম্মদ নাসিমকে। আজ শনিবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের এই মুখপাত্রকে।
গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ গণমাধ্যমে গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করা হচ্ছিল নাসিমের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত আপডেট। এ নিয়ে মানুষের কৌতুহলও ছিল যথেষ্ট। দলের ভেতর থেকে তো বটেই, সাধারণ মানুষেরও কৌতুহলের কমতি ছিল না নাসিমকে নিয়ে। এর যথেষ্ট কারণও ছিল। জাতীয় চারনেতার অন্যতম ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর ছেলে তিনি। সাবেক মন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করেছেন ১৪ দলের মুখপাত্র হিসেবে। সেইসব সূত্রে মানুষের মধ্যে তাঁর ছিল ব্যাপক পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা।
করোনার উপসর্গ নিয়ে গত ১ জুন রাজধানীর শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি হন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। পরে তাঁর করোনাভাইরাস টেস্ট করা হয় এবং ওই দিন রাতে তাঁর করোনা পজিটিভ আসে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও পরদিন থেকেই মোহাম্মদ নাসিমের অবস্থা উন্নতি হয়। কিন্তু গত ৫ জুন ভোরে তিনি স্ট্রোক করেন। পরে জরুরিভাবে ওই দিনই তাঁর অপারেশন করা হয়। পরদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। অপারেশনের পর চিকিৎসকরা তাঁকে ৭২ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখেন।
যদিও সর্বশেষ নমুনা পরীক্ষায় আবার নেগেটিভে ফিরে আসেন তিনি। তবে শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। কয়েক দিন ধরে তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন ছিল। গত ৫ জুন থেকে তিনি কোমায় ছিলেন। গতকাল শুক্রবার মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে তানভির শাকিল জয় জানিয়েছিলেন, তাঁর বাবা আগের মতোই আছেন। অবস্থার কোনো উন্নতি বা পরিবর্তন হয়নি।
গত বৃহস্পতিবার রাতে মোহাম্মদ নাসিমের মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া জানিয়েছিলেন, নাসিমের শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ। অবস্থার উন্নতির জন্য সব ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, চেষ্টা করা হচ্ছে।
এরই মধ্যে পরিবারের পক্ষ থেকে নাসিমকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে খবরও আসে। তবে শেষপর্যন্ত তা আর সম্ভব হয়নি। কেননা, সিঙ্গাপুর বা দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার মতো শারীরিক অবস্থা ছিল না তাঁর। তবে দেশেই চলছিল তাঁর জন্য সর্বোচ্চ চিকিৎসা ব্যবস্থা। তবু, বাঁচানো যায়নি তাঁকে। সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় মৃত্যুকেই আলিঙ্গন করতে হলো দীর্ঘ সময়ের ঐতিহ্যবাহী দল আওয়ামী লীগের এই ত্যাগী নেতাকে।