আজ থেকে সিলেট বিমানবন্দরে প্রায় দু’হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার শুরু
বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। আজ (বৃহস্পতিবার) আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হচ্ছে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ কাজ। সকাল দশটায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়াল কনফারেন্সে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় অন্যতম মাইল ফলক হিসেবে বিবেচিত হবে এই প্রকল্পটিতে ব্যয় হচ্ছে প্রায় দু’হাজার কোটি টাকা। বিমান বন্দরটির সংস্কার ও সম্প্রসারণের জন্যই এ প্রকল্প।
পৃথিবীর অষ্টম বৃহৎ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান চীনের বিইউসিজি কোম্পানি এরই মধ্যে গ্রাউন্ডওয়ার্ক শুরু করেছে। কোভিড বিপর্যয় দেখা না দিলে এতদিনে প্রকল্পটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়ে যেত। প্রকল্পটি নিয়ে বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, সিনিয়র সচিব মহিবুল হক ও বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান ইতোমধ্যে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
আজকের অনুষ্ঠানে সিলেটে দু’শো অতিথি উপস্থিত থাকবেন। তাদের একান্ত উৎসাহ ও আগ্রহেই করোনা তাণ্ডবকে উপেক্ষা করে শুরু হতে যাচ্ছে এই কর্মকাণ্ড। দেশের তৃতীয় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে সিলেটকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও চাচ্ছেন যথাসময়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজ শুরু ও শেষ করতে। যাতে আন্তর্জাতিক এভিয়েশনেও ওসমানী বিমানবন্দর একটা নিজস্ব অবস্থান প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।
এই প্রকল্প সম্পর্কে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী জানিয়েছেন, দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর যাত্রী ও কার্গো হ্যান্ডলিং সক্ষমতার মান ও পরিধি বৃদ্ধির লক্ষ্যেই বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ হাতে নিয়েছে বেসরকারী বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। তারই ধারাবাহিকতায় পূর্ণ হতে যাচ্ছে সিলেটবাসী দীর্ঘদিনের স্বপ্ন।
জানা গেছে, এটি হবে বিদেশের আদলে চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্যের নতুন টার্মিনাল ভবন। কার্গো ভবন, ফায়ার স্টেশন, কন্ট্রোল টাওয়ারসহ আরও বেশকিছু উন্নয়ন কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। ২ হাজার ৩০৯ কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে এসব উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন হবে ১ অক্টোবর বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোঃ মফিদুর রহমান জানিয়েছেন, ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে বিমানবন্দরের উন্নয়নে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৩০৯ কোটি ৭৯ লাখ ১৪ হাজার টাকা।
এ বিষয়ে প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল মালেক জানান, প্রথম পর্যায়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় করা হবে বিমানবন্দরের ভূমি উন্নয়ন কাজ। নির্মাণ করা হবে ৩৪ হাজার ৯১৯ বর্গমিটারের আধুনিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবন।
এ টার্মিনালে ৮টি বিমান একসঙ্গে যাত্রী ওঠানামা করাতে পারবে। এর বাইরে ৬ হাজার ৮৯২ বর্গমিটারের কার্গো ভবন, ২ হাজার ৪১৫ বর্গমিটারের ফায়ার স্টেশন, ২ হাজার ৭৭২ বর্গমিটারের কন্ট্রোল টাওয়ার, ১ হাজার ৩৯৫ বর্গমিটারের প্রশাসনিক ভবন, ৬০৬ বর্গমিটারের মেইনটেন্যান্স ভবন, ২ হাজার ৫২৪ বর্গমিটারের ইউটিলিটি ভবন এবং ৯ হাজার ২৯৯ বর্গমিটারের মধ্যে আবাসিক ভবন, আনসার ব্যারাক, স্কুল স্থানান্তর, রেস্ট হাউস ও ডরমেটরি নির্মাণ করা হবে।
সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে আধুনিক রূপ দিতে এ্যাপ্রোন, ট্যাক্সিওয়ে ও শোল্ডার, রাস্তা, কার পার্কিং ও ফুটপাথ নির্মাণ করা হবে।