আন্তর্জাতিক সময়ঐক্য প্রতিষ্ঠায় মুসলিম দেশের নেতাদের ইমরান খানের চিঠি
বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ
অমুসলিম দেশগুলোতে ক্রমবর্ধমান ইসলামবিদ্ধেষের বিরুদ্ধে সমন্বিতভাবে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশের নেতাদের কাছে চিঠি লিখেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
বিবৃতিতে অনুযায়ী বুধবার থেকে চিঠি ইস্যু করা শুরু করা হয়েছে। কোন কোন দেশের রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানদের এ চিঠি পাঠানো হচ্ছে তা জানা যায়নি।
গত সপ্তাহে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর বিরুদ্ধে ইসলামবিদ্ধেষ উসকে দেয়ার অভিযোগ তুলেন। ফরাসি সরকারের তথাকথিত ইসলামি বিচ্ছিন্নতাবাদ মোকাবিলার ঘোষণার প্রেক্ষাপটে তিনি এ অভিযোগ আনেন। সেই ধারাবাহিকতায় মুসলিম দেশের নেতাদের কাছে ইসলামবিদ্ধেষ রুখে দাঁড়াতে সমবেতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানালেন।
মুসলমানদের ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে মতাদর্শ শিক্ষাকেন্দ্র বলে মন্তব্য করেন ম্যাক্রোঁ। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ভিত্তিতে ইসলামকে অসম্মানের পক্ষে অবস্থান নেন তিনি। তার এমন ন্যক্কারজনক কর্মকাণ্ডে মুসলিম বিশ্বে ক্ষোভ, নিন্দা এবং প্রতিবাদের ঝড় উঠে। ডাক দেয়া হয় ফরাসি পণ্য বর্জনের।
চলতি মাসের শুরুতে মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন শ্রেণিকক্ষে প্রদর্শন করে ফরাসি শিক্ষক স্যামুয়েল পেটি। পরে তিনি হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।
বুধবার চিঠিতে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান হামলা এবং ইসলামবিদ্ধেষ মোকাবিলায় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর নেতাদের এক হওয়ার আহ্বান জানান ইমরান খান।
চিঠিতে ফ্রান্সের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, পশ্চিমা দেশগুলোর নেতৃস্থানীয় পর্যায়ের বিবৃতিতে স্পষ্ট যে ইউরোপে ইসলামবিদ্ধেষ বাড়ছে। সেখানে বসবাস করা বহু মুমলমান এখন ভয়াবহ চক্রের মধ্যে আছে।
বলেন, ওইসব দেশের রাষ্ট্রনেতারা এখনো বুঝতে পারেনি, বিশ্বের মুসলমানদের এ ভালোবাসা, শ্রদ্ধা শুধুমাত্র মহানবী মুহাম্মদ (সা.) এবং পবিত্র গ্রন্থ কোরআনের জন্য।
ইমরান খান বলেন, আল্লাহর নবী এবং পবিত্র গ্রন্থ কোরআনকে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা করার কারণে মুসলমাদের বিরুদ্ধে চক্রাকারে ভয়াবহ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। মহানবী মুহাম্মদ (সা.) এবং কোরআনকে অপমানের প্রতিবাদ জানানো হয়েছে, আর তারা প্রতিবাদকে সহিংস কর্মকাণ্ড আখ্যা দিয়েছে। নবী আর কোরআনের অপমানকে অভিহিত করছে তথাকথিত বাকস্বাধীনতা হিসেবে!
’মুসলমানদের প্রান্তীকরণ করা হচ্ছে। সেখানে জায়গা দেয়া হচ্ছে উগ্রাবদী এবং কট্টর ডানপন্থিদের। সরকারিভাবে প্রিয় নবীকে অসম্মান করা হচ্ছে। এসবের প্রতিবাদে ক্ষোভ, নিন্দা জানিয়েছে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান দেশগুলো। বলেন ইমরান খান।
গত সপ্তাহে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতার কাছে পাঠানো চিঠির বিষয়ও তুলে ধরেন ইমরান খান। সেখানে তিনি মহানবীর ব্যক্তিত্ব এবং কোরআনকে হলোকাস্টের মতো বিবেচনার আহ্বান জানান। বাকস্বাধীনতার নামে কারো অনুভূতিকে অসম্মান, প্রশ্ন তোলা, ব্যঙ্গ করা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
২০১৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে ব্যক্তিগত এবং সরকারিভাবে বিভিন্ন পর্যায়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে আক্রমণের বিষয়টি উত্থাপন করে আসছেন ইমরান খান। বিশেষভাবে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ভাষণে ইসলামবিদ্ধেষ এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে আক্রমণের বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেন তিনি।