আশির দশকের শক্তিমান কবি ফজলুল হক
মোঃ জাকির হোসেন, নিউইয়র্ক থেকেঃ-
আজ দেখছি ঝলমল হয়ে উঠেছে আমার নির্বাসন চত্বর
রৌদ্র দাঁড়িয়ে আছে দূরে। আরণ্যক ভূ-আবাসন পেরিয়ে
গভীর ভিক্ষায় পূর্ণ রাত্রির প্রান্তরে নিশিপরিদের দেশে
যাদের নৌকো ভাসে তারা সাদা মেঘ-
ইক্ষুনদীর জলে এখন ধর্মপীঠের ছায়া দেখছি। লাইন গুলো কবির প্রকাশিত- শঙ্খ ঘোষের সঙ্গে নির্বাসনের দিনে থেকে নেওয়া।
প্রাকৃতিক ও কৃ্ত্রিম সৌন্দর্যের যেমন ভরপুর তদরুপ গুনিজনের আবির্ভাব ঘটেছে অনেক।বিশ্বজুড়ে রয়েছে নাম যশ খ্যাতি। এ উপজেলার গুনিজনের।বিয়ানীবাজার উপজেলার কয়েকজন গুনিজনের মধ্যে ফজলুল হক একজন।
তিনি বিয়ানীবাজার উপজেলা তথা সেই আশির দশকের শক্তিমান কবি ফজলুল হক। ভাগ্যের গ্যাড়াকলে জাতীয় পাঠ্যপুস্তকে তিঁনির কবিতার স্থান না পেলে ও ভবিষ্যতে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কবি রবিন্দ্রনাথের কবিতা কিংবা কবি জসিম উদ্দিন কবিতার চেয়ে কবি ফজলুল হকের কবিতার চন্দপতন এক করলে কেউ কারোর চেয়ে পিছিয়ে নেই।
আরোও পড়ুনঃ করোনা নিয়ে কবি অসীম সাহা’র গান
১৯৬১ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর সিলেট জেলার প্রাচীনতম জনপদ পঞ্চখন্ডের বর্তমান বিয়ানীবাজার উপজেলার কসবা গ্রামে জন্ম ফজলুল হকের।বাঙালির সারস্বত সাধনার ইতিহাসের ধারায় তাঁর পূর্বসূরী দার্শনিক পন্ডিত রঘুনাথ শিরোমণি, শ্রী চৈতন্য পার্ষদ শ্রীবাস পন্ডিত, কবি বৃন্দাবন দাস, মহেশ্বর ন্যায়ালংকার, শহীদ বুদ্ধিজীবী ড.জি.সি.দেব ও তাত্ত্বিক তপোধীর ভট্রাচার্য সহ নাম না জানা গুনিজনের জন্মভূমি। পিতৃভূমি পঞ্চখন্ডের মনীষা ও পরস্পরার নিকটতম এই কবি ফজলুল হক।
কবিতা লেখার পাশাপশি লিখেছেন গদ্য ও গীতি কবিতা। তিঁনি বাংলাদেশ বেতারের খ্যাতিমান গীতিকার, প্রগতিশীল সংস্কৃতিকর্মীও সাংবাদিক হিসেবে তাঁর সুনাম রয়েছে। তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য – পৃথক দংশন, কবির জন্মদিন।
সাদামাটা চলাফেরার মধ্যে কবির কোন রকমের সান, গৌরব ছিলোনা। কেননা প্রতিদিন একি রুপে একি বেশে শহরের নির্ধারিত কয়েকটি স্থানে শুভাকাঙ্ক্ষীদের সাথে আড্ডার ফাঁকে কবিতার ছন্দে হারিয়ে যাওয়া অসংখ্য রুপকথার তথ্য রয়েছে।
অনেকের মতে জাতীয় পাঠ্যপুস্তকের সংশ্লিষ্টদের কবিতা সম্পর্কে যর্থাথ জ্ঞান রয়েছে। সময়ের ব্যস্ততার কারনে হয়তো বা কবি ফজলুল হকের কবিতার প্রতি দৃষ্টিগোচর তাঁদের হয়নি। তবে নিরাশ হওয়ার কিছু নাই। আকাশে বাতাসে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকবে। পঞ্চখন্ডের কবি তথা বিয়ানীবাজারের কবি ফজলুল হকের পদচিহ্ন। তিনির কর্মওগুনে উপজেলার সচেতনবাসীর অন্তরে অজস্র ভালোবাসায় স্থান করে নিয়েছেন। বর্তমানে কবি সিলেট শহরে বসবাস করছেন। কবির প্রকাশিত মায়ারেখা এর একটি অশং তুলে ধরলাম-
এই কি বসন্তদিন তবে?
অথচ আমাদের সকলেরই ইচ্ছে ছিল
বসন্ত পেরিয়ে, একদিন
কৌম আনন্দে ভাসতে-ভাসতে
পঞ্চখন্ড যাব।