ঈদের সামগ্রী নিয়ে সেই ১৮ জেলের পরিবারে ইউএনও
সাগর থেকে মাছ ধরে বাড়ি ফিরছিলেন কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়ার ১৮ জেলে। পথে বঙ্গোপসাগরের নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে তাঁদের ধরে নিয়ে যায় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। দেড় মাস কেটে গেলেও তাঁরা মুক্তি পাননি। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে জেলেদের পরিবারগুলো। তাঁদের বাড়িতে লাগেনি ঈদের আনন্দ। তাঁদের দুরবস্থার খবর পেয়ে ঈদের খাদ্যসামগ্রী নিয়ে ছুটে গেলেন টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।
ইউএনওর পক্ষ থেকে জালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৮টি পরিবারের কাছে বস্তাভর্তি ঈদের পণ্যসামগ্রী দেওয়া হয়। প্রতিটি বস্তার মধ্যে ছিল লাচ্ছা সেমাই চার প্যাকেট, সাদা সেমাই দুই কেজি, দুধ এক কেজি, ছোলা চার কেজি, পোলাও চাল ছয় কেজি, চিনি তিন কেজি ও সয়াবিন তেল দুই লিটার। এসব পণ্য বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন টেকনাফ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ভবসিন্ধু রায়, সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুস সালাম ও জালিয়াপাড়া মৎস্যজীবী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবদুল গনি।
২৪ দিনের শিশুসন্তানকে কোলে নিয়ে ইউএনওর মুখ থেকে স্বামীর মোহাম্মদ আকবর ওরফে আলী আকবরের খবর শুনতে ছুটে আসেন স্ত্রী মোমিনা বেগম। তিনি বলেন, স্বামীকে ধরে নেওয়ার সময় ছেলেটি পেটে ছিল। এখনো বাবা-ছেলের দেখাদেখি হয়নি। স্বামীকে ফেরত এনে দিতে ইউএনওর প্রতি আকুতি জানান তিনি।
ইউপির সদস্য আবদুস সালাম বলেন, ওই সব পরিবারের আয়রোজগারের একমাত্র উপার্জনক্ষম লোকজন যখন মিয়ানমারে বন্দী, তখন ইউএনওর মাধ্যমে কিছু খাদ্যসামগ্রী পাওয়ায় পরিবারগুলোয় কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে। জেলেদের দেশে ফিরিয়ে আনতে জোরালো উদ্যোগ নিতে ইউএনওর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ইউএনও মোহাম্মদ কায়সার খসরু বলেন, ‘এখানে আমি নতুন এসেছি, তাই বিষয়টি আমার জানা ছিল না। প্রথম আলোয় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর ১৮ জেলে পরিবারের মানবেতর জীবনযাপনের বিষয়টি জানতে পেরেছি। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মুখে হাসি ফোটানোর জন্য ওই পরিবারগুলোর কাছে ছুটে গিয়ে ঈদের খাদ্যসামগ্রী তুলে দিয়েছি। তবে ভবিষ্যতেও সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া জেলেদের দ্রুত দেশে ফেরত আনার জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।’