একটি স্কুলে ৫ বছরের বেশি থাকতে পারবেন না প্রাইমারী স্কুল শিক্ষকরা
বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা চাকরির শুরু থেকেই সারাজীবন এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান করে আসছেন। এমন ব্যবস্থার পরিবর্তন করে শিক্ষকদের নির্ধারিত সময়ের পর পর বদলি বাধ্যতামুলক করা হবে। বদলির এই ব্যবস্থা নিতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালককে এই নির্দেশনা দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল হোসেন বলেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের চাকরি বদলিযোগ্য করা হবে। তাদের ৩ বছর পর পর অথবা ৫ বছর পর পর এক স্কুল থেকে অন্য স্কুলে বদলি করা হবে।’
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরকে এ বিষয়ে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করতে বলা হয়েছে। তিন বছর পর অথবা ৫ বছর পর বিবেচনা করে প্রস্তাবনা চূড়ান্ত করবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। তবে শিক্ষকদের যাতে ভোগান্তি না হয় সে কারণে কাছাকাছি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বদলি করার ব্যবস্থা রাখা হবে। সরকারি চাকরিজীবীদের তিন বছর পর পর বদলি করার নিয়ম থাকলেও প্রাথমিক শিক্ষকদের বেলায় তা করা হয় না। এই প্রথম এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে মন্ত্রণালয়।
সিনিয়র সচিব বলেন, ‘বদলি নিয়ে যে একটা অনৈতিক কাজ দীর্ঘদিন থেকে চলে আসছে। সেটা বন্ধ করবো। ন্যায় বিচার যাতে হয় সেটা দেখবো।’
আকরাম-আল হোসেন বলেন, অনেক শিক্ষক এক জায়গায় ৯/১০ বছর থাকছেন। তাই এনিয়ে বদলি বাণিজ্য শুরু হয়েছে। এছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা কেউ ক্লাসে থাকেন না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এর আগে সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেছিলেন, একজন শিক্ষক এক স্কুলে ৩ বছরের বেশি সময় থাকতে পারবেন না।
জাকির হোসেন আরও বলেছিলেন, প্রধান শিক্ষক টিও অফিসে কাজের কথা বলে চায়ের দোকানে গিয়ে আড্ডা দেন। যখন বিদ্যালয়ের অভিভাবক থাকে না তখন ঠিকমত ক্লাস হয় না। এই অবস্থা পাল্টাতে প্রত্যেক স্কুলে একজন করে অফিস সহকারী নিয়োগ দেয়া হবে। যাতে করে প্রধান শিক্ষককে টিও অফিসে যেতে না হয়
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষক বদলি নিয়ে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ ওঠে বিভিন্ন সময়। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি ও মার্চে বদলির সুযোগ দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষক বদলিতে তদবির শুরু হয়। বিগত বছরগুলোতে শিক্ষক বদলিতে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। এই দুর্নীতি দূর করতে অনলাইনে শিক্ষক বদলির উদ্যোগ নেয় মন্ত্রণালয়। কিন্তু এখনও তা চালু করা সম্ভব হয়নি। সিনিয়র সচিব মো. জানান, শিগগিরিই অনলাইনে শিক্ষক বদলি শুরু হবে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি জীবন শেষ করেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষক। সুবিধাজনক জায়গায় যেতে বদলি হতে চান তারা। শিক্ষকদের এই সুবিধা বিবেচনা করে বছরে একবার বদলির সুযোগ দেওয়া হতো।