এক কাপড়েই সাত দিন কেটে গেল পরীমণির
বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ
চিত্রনায়িকা পরীমণি গত ৪ আগস্ট র্যাবের হাতে গ্রেফতার হন। এরপর থেকে তিনি একই পোশাকে আছেন। ডিবি কিংবা সিআইডি কেউই তার জন্য পোশাক গ্রহণ করেনি। তাই বার বার আদালতে একই পোশাক পড়ে আসতে হচ্ছে তাকে। মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) পরীমণির রিমান্ড শুনানিতে আদালতে এ কথা জানান তার আইনজীবী।
শুনানি শেষে পরীমণির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভি সাংবাদিকদের বলেন, পরীমণি যেদিন গ্রেফতার হয়েছিলেন সেদিন যে পোশাকে ছিলেন আজ পর্যন্ত সেই একই পোশাকে আছেন। তার পোশাক নিয়ে তার পরিবারের লোকজন পুলিশের কাছে গেলেও তারা তাকে পরীমণির সঙ্গে দেখা করতে দেননি। পোশাকও গ্রহণ করেননি।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ পরীমণিকে আইনজীবীদের সঙ্গেও দেখা করতে দেয়নি। তাই আজ একই কাপড়ে আবার বিজ্ঞ আদালতে এসেছেন পরীমণি।
রাজধানীর বনানী থানায় দায়ের করা মাদক মামলায় চার দিনের রিমান্ড শেষে আজ মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পরীকে হাজির করা হয়। তার সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপুকেও আদালতে হাজির করা হয়। প্রথমে পরীকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। পরে দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে পরীমণিকে আদালতে তোলা হয়।
শুনানি শেষে মাদক মামলায় পরীমণির ফের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। একই মামলায় তার সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপুরও ২ রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
আদালত থেকে বের হওয়ার সময় তিন বার চিৎকার করেছেন চিত্রনায়িকা পরীমণি। চিৎকার করে তিনি বলেন, ‘আমি নির্দোষ, আমাকে ইচ্ছা করে ফাঁসানো হয়েছে। আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।’ এরপরই তাকে আদালতের গারদখানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
আজ পরীকে দেখতে দুপুর ১২টায় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পৌঁছান পরীর নানা শামসুল হক। দুপুরে রিমান্ড শুনানিতে কাঠগড়ায় আনা হলে অঝোরে কাঁদতে দেখা যায় পরীকে। এ সময় পরীকে দেখতে এজলাসে ভিড় করেন আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ সময় আদালতের এক কর্মচারী পরীমণির ছবি তুলতে গেলে পুলিশ, আইনজীবী ও উপস্থিত অন্যান্যদের মধ্যে বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। কিছুক্ষণের মধ্যেই অবশ্য পরিস্থিতি শান্ত হয়।
গত ৫ আগস্ট পরীমণি ও আশরাফুল ইসলাম দীপুর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ।
ওইদিন পরীমণির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভি বলেন, তার (পরীমণির) বাসা থেকে যে সাড়ে ১৮ লিটার মদ উদ্ধার দেখানো হয়েছে, তা তার বাসায় ছিল না। তার বাসায় কয়েকটি খালি মদের বোতল ছিল। সেগুলো ডেকোরেশন পিস হিসেবে রাখা ছিল। এগুলো জব্দ তালিকায় দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, তার কাছে কোনো আইস এবং এলএসডি ছিল না।
এর আগে, বুধবার (৪ আগস্ট) রাতে প্রায় ৪ ঘণ্টার অভিযান শেষে বনানীর বাসা থেকে পরীমণি ও তার সহযোগীকে আটক করে র্যাব। তার বাসা থেকে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়। আটকের পর তাদের নেওয়া হয় র্যাবের সদর দফতরে। বুধবার রাতভর সেখানেই থাকতে হয় পরীমণিকে। বৃহস্পতিবার র্যাব-১ বাদী হয়ে মাদক আইনে পরীমণির বিরুদ্ধে মামলা করে। মামলা দায়েরের পর সেদিনই তাকে আদালতে নেওয়া হয়।