এবার রোহিঙ্গা শিবিরে ভয়ংকর হচ্ছে করোনা, আজ থেকে ১২ দিনের লকডাউন
বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ
সারা দেশে এক মাস ধরে লকডাউন চলছে। এর মধ্যে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরগুলোয় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দিন দিন বাড়ছে। এই অবস্থায় উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি রোহিঙ্গা শিবিরে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি শিবিরকে কঠোর লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল থেকে ৩১ মে পর্যন্ত লকডাউন থাকবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) শাহ রেজওয়ান হায়াত। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে সামাজিক দূরত্ব বাজায় রেখে জরুরি ওষুধ, খাদ্য ও গ্যাস সিলিন্ডার বিতরণের কার্যক্রম চলমান থাকবে।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয়ের স্বাস্থ্য সমন্বয়কারী আবু তোহা এম আর ভূঁইয়া বলেন, করোনাভাইরাসের শুরু থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির নিয়ে সবাই উৎকণ্ঠার মধ্যে ছিল। তবে হঠাৎ কয়েক দিন ধরে জেলার আক্রান্ত করোনা রোগীদের অধিকাংশই শরণার্থীশিবিরের। কয়েক মাস আগে প্রতিদিন এক থেকে দুজন করে করোনায় আক্রান্ত হলেও ঈদের পর থেকে হঠাৎ দৈনিক ২০ থেকে ৪৫ জনের মতো করোনা রোগী পাওয়া যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত রোহিঙ্গা শিবিরগুলোয় ৯১৩ জন রোহিঙ্গা শিশু, নারী ও পুরুষের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। ১২ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার করোনা শনাক্ত হয়েছে ৪৫ জনের।
আবু তোহা এম আর ভূঁইয়া আরও বলেন, কক্সবাজারে ৩৪টি ও নোয়াখালীর ভাসানচরে ১টিসহ ৩৫টি রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির রয়েছে। এর মধ্যে এ পর্যন্ত নোয়াখালী ভাসানচরে কোনো রোহিঙ্গার করোনা শনাক্ত হয়নি। কক্সবাজারের ৩৪টি রোহিঙ্গা শিবিরে মধ্যে উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প-২ ডব্লিউ, কুতুপালং ক্যাম্প-৩, কুতুপালং ক্যাম্প-৪, জামতলি ক্যাম্প-১৫ ও টেকনাফের লেদা ক্যাম্প ২৪ শিবিরকে কঠোর লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কিছু স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, কক্সবাজারের ৩৪টি রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরে সাড়ে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করে আসছে। এসব বসতিতে স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা নেই বললেই চলে। এর মধ্যে রোজা ও ঈদে জনসমাগমের নানা উপলক্ষ ছিল।
করোনা পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের সহসভাপতি সৈয়দ উল্লাহ বলেন, শিবিরে করোনা আক্রান্তের খবরে লোকজন ভয়ে আছে। ঘনবসতি ও অবাধ বিচরণ থাকার কারণে কয়েক দিন ধরে করোনা রোগী পাওয়া যাচ্ছে। শিবিরে কিছু লোকজন মাস্ক পরলেও তরুণদের কোনোভাবেই মাস্ক পরানো যাচ্ছে না।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক রঞ্জন বড়ুয়া রাজন বলেন, স্থানীয় বাজারগুলোয় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আনাগোনা থাকায় সংক্রমণ স্থানীয় লোকজনের মধ্যে ছড়ানোর শঙ্কা রয়েছে।