খুব সহজ পদ্ধতিতে নতুন নিয়মে যুক্তরাজ্যের স্টুডেন্ট ভিসা
বিয়ানীবাজারের ডাকঃ
অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু হয়েছে নতুন নিয়মে যুক্তরাজ্যের স্টুডেন্ট ভিসা। অস্ট্রেলিয়ার স্টুডেন্ট ভিসার পদ্ধতি অনুসরণ করে যুক্তরাজ্যও ঝুঁকেছে পয়েন্ট বেইজড ভিসা প্রক্রিয়ায়। এখন থেকে ভিসা পাওয়ার জন্য একজন শিক্ষার্থীকে ৭০ পয়েন্ট অর্জন করতে হবে। তবে সেটা খুব কঠিন নয় এবং বাংলাদেশ থেকে যেকোনো শিক্ষার্থী এ সুবিধায় আবেদন করতে পারবেন।
আবেদনকারী শিক্ষার্থীকে প্রথমে স্পনসর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে একটি ভর্তির নিশ্চয়তাপত্র বা কাস রেফারেন্স নম্বর সংগ্রহ করতে হবে। এর জন্য শিক্ষার্থী পাবেন ৫০ নম্বর। সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদনের পর শিক্ষার্থীর কাগজপত্র যেমন সার্টিফিকেট, মার্কশিট ইত্যাদি যাচাইয়ের পর স্পনসর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাস ইস্যু করবে।
কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদনপত্রের সঙ্গে আপনি কেন সেখানে পড়তে চান, তা বর্ণনা করে একটি রচনা লিখে জমা দিতে হয়। এ ছাড়া দুটি রেফারেন্স লেটারও লাগতে পারে আপনার পুরোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কাছ থেকে। এটা অবশ্য স্পনসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী প্রযোজ্য।
শিক্ষার্থীর আর্থিক সক্ষমতা প্রমাণের জন্য মিলবে ১০ পয়েন্ট। যুক্তরাজ্যের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কোর্সের সম্পূর্ণ টিউশন ফি প্রদান এবং প্রতি মাসে থাকা-খাওয়ার ব্যয়ভার বহন করার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ প্রস্তুত আছে, এটা শিক্ষার্থীকে প্রমাণ করতে হবে। কোর্স ফিতে সাধারণত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট কোর্স অনুযায়ী তারতম্য লক্ষ করা যায়। কোর্স যদি ৯ মাসের কম সময়ের জন্য হয়, তবে একজন আবেদনকারীকে দেখাতে হবে সম্পূর্ণ কোর্স ফি এবং প্রতি মাসে ১ লাখ ১১ হাজার (বর্তমান রেট অনুযায়ী) করে কোর্সের সময় অনুযায়ী থাকা-খাওয়ার অর্থ প্রদানের সক্ষমতা। আর যদি কোর্সের সময় ৯ মাসের বেশি হয়, তাহলে কোর্স ফিয়ের সঙ্গে প্রতি মাসে উপরিউক্ত হারে ৯ মাসের জন্য অর্থের ব্যবস্থা। এই পরিমাণ টাকা আবেদনকারী কিংবা অভিভাবকের ব্যাংক হিসাবে দেখাতে হবে কমপক্ষে ২৮ দিন (কিছুটা শিথিলযোগ্য)। অবশ্য ফিক্সড ডিপোজিট কিংবা লোন নিয়েও দেখানো যাবে।
সবশেষে ইংরেজি ভাষায় সক্ষমতা প্রমাণের জন্য পাওয়া যাবে আরও ১০ পয়েন্ট। সাধারণত ব্যাচেলর কিংবা এর ওপরের পর্যায়ে লেখাপড়া করার জন্য ইংলিশ লেভেল বি-২ বা এর সমমান লাগবে। এটা বাংলাদেশে সর্বাধিক প্রচলিত আইএলটিএসের ৫.৫ থেকে ৬–এর সমান। আবেদনকারীর যদি ইংরেজিতে সক্ষমতার চেয়ে কম হয় অথবা যুক্তরাজ্যে মূল কোর্সের সঙ্গে ইংরেজি ভাষা শিক্ষা কোর্সসহ আসতে চান, তবে ইংলিশ লেভেল বি-১ লাগবে, যা আইএলটিএস ৪-৫–এর সমমান।
আবেদনকারী যদি ওপরের তিনটি পর্যায় থেকে ৭০ পয়েন্ট স্কোর করতে পারেন, তাহলে যুক্তরাজ্যের ভিসা পাওয়ার ন্যূনতম শর্তাবলি পূরণ হবে। এই সুযোগ নিয়ে আবেদন করতে পারেন যে কেউই। বাংলাদেশ থেকে স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন ফি ৬ মাসের কোর্সের জন্য ১০ হাজার ৮০০ এবং ১১ মাসের জন্য ২০ হাজার ৭০৯ টাকা। যদি ৬ মাসের চেয়ে বেশি সময়ের জন্য ভিসার দরকার হয়, তাহলে যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগে দিতে হবে বার্ষিক ৩০০ পাউন্ড করে প্রতিবছরের হিসাবে।
এখানে কিছু তথ্য দেওয়া হয়েছে গাইড হিসাবে। ক্রম পরিবর্তনশীল ইমিগ্রেশন–সংক্রান্ত নিয়মের তথ্যাবলিতে কিছুটা তারতম্য হতে পারে। এ বিষয়ে বিস্তারিত নিয়মাবলি যুক্তরাজ্যের সরকারি ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে। আগ্রহীরা সেখান থেকে প্রয়োজনীয় তথ্যাবলি সংগ্রহ করতে পারবেন।
যোগাযোগপ্রযুক্তির উৎকর্ষতার সাহায্য নিয়ে একজন শিক্ষার্থী সরাসরি আবেদন করতে পারেন যুক্তরাজ্যের যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর আলাদা বিভাগ আছে। তারা একজন শিক্ষার্থীর আবেদনপত্র প্রস্তুতের জন্য প্রয়োজনীয় সাহায্য অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করে। তাই আগ্রহীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সরাসরি ফোনে বা ই–মেইলে যোগাযোগ করতে পারেন।
ব্রেক্সিট–পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে যুক্তরাজ্যের সরকার বিদেশি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ অনেক শিথিল করেছে। প্রতিবছর ছয় লাখ শিক্ষার্থী সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও এ মুহূর্তে কোনো সংখ্যা নির্ধারণ করেনি সরকার। সে জন্য বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য যুক্তরাজ্যের দরজা আপাতত অবারিত।