ছেলের বিয়েতে মা জানতে পারলেন কনে তার মেয়ে!
ছেলের বিয়ের আসরে পুত্রবধূর হাতে জন্মদাগের ওপরে দৃষ্টি আটকে গিয়েছিল ছেলের মা’র। হঠাৎ মনে পড়ে গিয়েছিল, তাঁর হাতের মুঠো থেকে ছিটকে যাওয়া একটা ছোট্ট হাত… সেখানেও যে ঠিক এমনই একটা দাগ ছিল!
কালবিলম্ব না-করে ছুটে যান মেয়েটির মা-বাবার কাছে। জানতে চান, মেয়েটি তাঁদের নিজেদের সন্তান কি না! এর পর যেটা সামনে আসল সেটা সিনেমার কাহিনির থেকেও চমকপ্রদ।
চিনের চিয়াংসু প্রদেশের সুচোউ শহরের এই ঘটনার কথা জানতে হলে পিছিয়ে যেতে হবে দুই দশক। এক মেলার ভিড়ে তাঁর বছর তিনেকের মেয়েকে হারিয়ে ফেলেছিলেন ওই নারী। অনেক থানা-পুলিশ করেছেন। কিন্তু কোনো খোঁজ মেলেনি সন্তানের। তার পরে অনেক দিন পার হয়ে গেছে। মেয়ের খোঁজ আর পাননি মা। সম্প্রতি ওই মহিলার ছেলের বিয়ে ঠিক হয়েছে। পুত্রবধূর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল আগেই, কিন্তু তখন চোখে পড়েনি সেই জন্মদাগ। বিয়ের আসরে যখন চোখে পড়ল, তখন আর এক মুহূর্তও দেরি করেননি তিনি। মেয়ের মা-বাবাকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনাদের মেয়েকে কি দত্তক নিয়েছিলেন আপনারা?’
মহিলার কথা শুনে হতচকিত হয়ে যান সেই দম্পতি। হ্যাঁ, ২০ বছর আগে অনাথ আশ্রম থেকে শিশুটিকে নিয়ে এসেছিলেন বটে, কিন্তু সে কথা তো কেউ জানে না। এমনকি, মেয়ে নিজেও না। তা হলে? মেয়ের মা-বাবার উত্তর শুনে মহিলা বুঝতে পারেন, তার পুত্রবধূ আর কেউ নয়, তাঁর সেই অনেক দিন আগে হারিয়ে যাওয়া মেয়ে!
বিয়ের অনুষ্ঠান তখন লাটে উঠেছে। বর হতভম্ব। অতিথিদের মধ্যে ফিসফাস শুরু হয়ে গিয়েছে। আর হাউহাউ করে কাঁদছে মেয়েটি, হারানো মাকে ফিরে পেয়ে। কয়েক মিনিট পরে মেয়েটির হুঁশ ফেরে। এ বিয়ে তো তা হলে সম্ভব নয়। বর যে তার আপন ভাই! তবে তাকে আশ্বস্ত করেন তার মা নিজেই। জানান, ছেলেটি তাঁর নিজের সন্তান নন। মেয়েকে খুঁজে না-পেয়ে কিছু দিন পরে দত্তক নিয়েছিলেন এক ছেলে শিশুকে। এই ছেলেই সে। ছেলেটিও অবশ্য জানত না যে সে দত্তক সন্তান। যেহেতু দুজনের মধ্যে কোনো রক্তের সম্পর্ক নেই, তাই এই বিয়েতেও বাধা নেই।
আর কী! চার হাত এক করে মা বললেন, ‘২০ বছর ধরে যে দুঃস্বপ্নের ভার বয়ে চলেছি, আজ তা থেকে মুক্ত হলাম’। আর নববধূর হাসিমুখে বক্তব্য, ‘বিয়ে করে যত না আনন্দ হচ্ছে, তার থেকে অনেক বেশি খুশি হয়েছি মাকে খুঁজে পেয়ে’।
সূত্রঃআনন্দবাজার