‘জাতির পিতার লেখা গ্রন্থ ছড়িয়ে দিতে হবে’
বিযানীবাজারের ডাক ডেস্ক:
জাতির পিতার লেখা গ্রন্থসমূহ নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। এসব বই পাঠ করে দেশপ্রেমের দীক্ষা নিতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
মুজিববর্ষ ও জাতীয় শোকদিবস ২০২০ উপলক্ষে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রোববার প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এ কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, চলছে শোকের মাস আগস্ট। জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার নিষ্ঠুরতম শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করতে দরকার বঙ্গবন্ধুকে জানা, তার আদর্শ সমুন্নত রাখা।
জাতীয় শোকদিবস উপলক্ষে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ এবং ‘আমার দেখা নয়াচীন’ গ্রন্থের ওপর ‘পড়ি বঙ্গবন্ধুর বই, সোনার মানুষ হই’ শিরোনামে পাঠ কার্যক্রম আয়োজন করেছে।
প্রাথমিকভাবে ঢাকা মহানগরের ১০টি বেসরকারি গ্রন্থাগারের সহযোগিতায় স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে চার মাসের পাঠ কার্যক্রমের উদ্বোধন হয়।
রাজধানীর গুলিস্তানের জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রে রোববার এ কার্যক্রমের উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ।
সংস্কৃতি সচিব বদরুল আরেফীনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ও মুক্তিযুদ্ধ-গবেষক মফিদুল হক এবং জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম।
শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন ও পরিকল্পনা) আবদুল মান্নান ইলিয়াস ও অতিরিক্ত সচিব (সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য) সাবিহা পারভীন।
বেসরকারি গ্রন্থাগারসমূহের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন দনিয়া পাঠাগারের সভাপতি শাহনেওয়াজ ও সীমান্ত পাঠাগারের প্রতিনিধি মানজারুল ইসলাম চৌধুরী সুইট। স্বাগত বক্তৃতা করেন জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক কবি ও সাংবাদিক মিনার মনসুর।
প্রধান অতিথি আরও বলেন, জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়। প্রাথমিকভাবে ১০টি বেসরকারি গ্রন্থাগারের সহযোগিতায় স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ১৫০ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে এটি শুরু হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়া হবে।
মফিদুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুর মূল্যবোধ ও আদর্শ ছিল একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তোলার। বঙ্গবন্ধু যে সাধনা করেছেন আজীবন এ উদ্যোগ পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর। এমন উদ্যোগ সম্প্রসারিত হোক সারা দেশে।
জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি ও যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, এই আয়োজন এমন একটি সময়ে, যে মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এমন একটি বছরে যখন বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করা হচ্ছে।
এই একই মাসে আরেকটি ক্ষত আছে। ২১ আগস্ট রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় নির্মম গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে একটি রাজনৈতিক শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার অপপ্রয়াস চালানো হয়েছে। এ মাস শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করার। এ সময় বঙ্গবন্ধুকে পাঠের যে আয়োজন তা অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী, সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত।
তিনি বলেন, আজকের ছেলেমেয়েরা মোবাইল, কম্পিউটারে আত্মস্থ হয়ে গেছে। এই জায়গায় দায়িত্ব রয়েছে অভিভাবক, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এবং দেশ পরিচালনায় নিয়োজিত রাজনৈতিক শক্তির।
দেশকে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে নেয়ার পাশাপাশি মানবিক বৃত্তি বিকশিত হওয়ার ক্ষেত্র তৈরি করে দেয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে পাঠাগার আন্দোলনের বিকল্প নেই।
মিনার মনসুর বলেন, এটি একটি পরীক্ষামূলক কর্মসূচি। যার লক্ষ্য, গৃহবন্দি পাঠক, বিশেষ করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পাঠ্যবইবহির্ভূত সৃজনশীল ও মননশীল বই পৌঁছে দেয়া।
তথ্যসুত্র: যুগান্তর