ঢাকা ছেড়েছিল ১ কোটি ৫ লাখ সিমধারী, ফিরেছেন মাত্র ৮ লাখ
বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ
ঈদুল আজহার ছুটিতে ঢাকা ছেড়েছিলেন প্রায় ১ কোটি ৫ লাখ মোবাইল সিম ব্যবহারকারী। তাঁদের মধ্যে ৮ লাখের কিছু বেশি গ্রাহক ঈদের পরের দিন গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় ফিরেছেন।
এর মানে দাঁড়ায় এই যে বিপুলসংখ্যক মানুষ ঢাকায় ফেরেননি অথবা ফিরতে পারেননি। আজ শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে ১৪ দিনের বিধিনিষেধ, যাকে ‘কঠোরতম লকডাউন’ বলে অভিহিত করছে সরকার। এই বিধিনিষেধকালে ওষুধ, কৃষি প্রক্রিয়াজাত ও খাদ্য এবং চামড়া প্রক্রিয়াজাতকারী কারখানা ছাড়া সব কলকারখানা বন্ধ থাকবে। জরুরি সেবা ছাড়া অন্যান্য প্রতিষ্ঠান খোলা যাবে না।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ১৫ জুলাই থেকে গতকাল পর্যন্ত আট দিনে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া মোবাইল অপারেটরদের গ্রাহকের একটি হিসাব তুলে ধরেন। এতে দেখা যায়, এই আট দিনে ১ কোটি ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৬৮৩ সিমধারী ঢাকা ছাড়েন। আর ঈদুল আজহার পরের দিন গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় ফেরেন ৮ লাখ ২০ হাজার ৫১৬ জন সিমধারী।
উল্লেখ্য, একজন গ্রাহকের একাধিক সিম থাকতে পারে। ফলে সিমসংখ্যা দিয়ে ঢাকা ছাড়া মানুষের প্রকৃত সংখ্যা বোঝা যায় না। তবে মোবাইল ফোন অপারেটরদের বৈশ্বিক সংগঠন জিএসএমএর হিসাবে, দেশে মোবাইল সংযোগের সংখ্যা ১৭ কোটির বেশি। তাঁদের মধ্যে ‘ইউনিক ইউজার’ ৫৪ শতাংশ। মানে হলো, দেশে প্রকৃত মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৯ কোটির কিছু বেশি।
ঢাকা ছেড়ে যাওয়া সিম সংখ্যার ক্ষেত্রে ‘ইউনিক ইউজারের’ হারটি বিবেচনায় নিলে বলা যায়, ঈদের ছুটিতে ঢাকা ছেড়েছে প্রায় ৫৬ লাখ ৭০ হাজার মানুষ। ফিরেছে প্রায় ৪ লাখ ৪৩ হাজার। অবশ্য এ হিসাবে মুঠোফোন ব্যবহারকারী নন এমন ব্যক্তি ও শিশুরা আসেনি।
আজ সকালে ঢাকায় ফিরে মানুষ কোনো যানবাহন না পেয়ে বিপাকে পড়ে। সকালে ঢাকার ফার্মগেট, পান্থপথ, গ্রিন রোড, মোহাম্মদপুর, শ্যামলী, রিং রোড, আদাবর, ধানমন্ডি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাস্তায় যান চলাচল ছিল না বললেই চলে। হাতে গোনা কয়েকটি রিকশা চোখে পড়েছে। সকাল নয়টার আগে পান্থপথ, শাহবাগ, ফার্মগেট এলাকায় বেশ কিছু মানুষকে মালপত্র নিয়ে হাঁটতে দেখা গেছে। মোড়ে মোড়ে অনেককে যানবাহনের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তাঁদের বেশির ভাগই ঈদ উদ্যাপন শেষে সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন।
ফার্মগেট এলাকায় সকাল আটটার দিকে আব্দুল মতিন মিয়া (৪০) নামের এক ব্যক্তি জানান, তিনি লঞ্চে বরিশাল থেকে সদরঘাটে সকালে পৌঁছেছেন। কোনো যানবাহন না পেয়ে হাঁটতে হাঁটতেই সদরঘাট থেকে ফার্মগেটে এসেছেন। তাঁর দুই হাতে দুটি ভারী ব্যাগ দেখা যায়।
এবারের ঈদুল আজহায় গণপরিবহন চলার সুযোগ দেওয়া হলেও ঢাকা ছাড়া মানুষের সংখ্যা গত ঈদুল ফিতরের তুলনায় কিছুটা কম ছিল। ঈদুল ফিতরের ছুটিতে বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে প্রায় ৬৫ লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়েছিল। একটি মোবাইল অপারেটর তাদের তথ্যভান্ডার ও কল প্রবণতা বিশ্লেষণ করে এ হিসাব জানিয়েছিল। সংখ্যাটি ‘ইউনিক ইউজার’ ধরে। এর মানে হলো, এক ব্যক্তির একাধিক সিম থাকলেও তাঁকে একজন গ্রাহক হিসেবেই গণ্য করা হয়েছিল।
এবার কঠোরভাবে বিধিনিষেধ বাস্তবায়ন করা হলে বিপুলসংখ্যক মানুষকে গ্রামে থাকতে হবে। সাম্প্রতিক জেলা পর্যায়ে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। জেলা হাসপাতালগুলোতে রোগীর ঠাঁই দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। মৃত্যু বেশি বিভাগীয় ও জেলা হাসপাতালগুলোতে।