দৃষ্টিনন্দন রূপে সিলেটের বন্দরবাজার-জিন্দাবাজার-চৌহাট্টা সড়ক
বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ
সিলেট নগরের সবচেয়ে ব্যস্ততম এলাকা বন্দরবাজার ও জিন্দাবাজার। এই এলাকার বন্দরবাজার-জিন্দাবাজার-চৌহাট্টা সড়কও তাই নগরের সবচেয়ে ব্যস্ততম। এতোদিন সরু এই সড়কে সারাদিন লেগে থাকতো যানজট। ফুটপাত ও সড়ক দখল করে আছে হকারসহ ক্ষুদে ব্যবসায়ীদের উৎপাতও। যানজট এড়াতে এই সড়ক এতোদিন একমূখী চলাচলের জন্য উন্মুক্ত ছিলো।
তবে এবার বদলে যাচ্ছে নগরের ব্যস্ততম এই সড়ক। সম্প্রসারিত করে এই সড়ককে দৃষ্টিনন্দন রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে সিটি করপোরেশন। ইতোমধ্যে তার কিছুটা দৃশ্যমান হতেও শুরু করেছে। নগরের প্রধানতম এই সড়ককে মডেল সড়কে পরিণত করার কথা জানিয়েছেন সিসিক মেয়র।
সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) সূত্রে জানা গেছে, বন্দরবাজার-জিন্দাবাজার-চৌহাট্টা সড়কের চলমান উন্নয়ন কাজ আগামী ২৬ মার্চের আগে শেষ হবে। কাজ শেষে দেশের অন্যতম আকর্ষণীয় সড়কে রূপ নেবে এই সড়ক। যুক্তরাজ্যের সড়কগুলোর আদলে এই সড়কের সৌন্দর্যবর্ধণ করা হচ্ছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে নগরবাসীর জন্য এই সড়কটি হবে সিসিকের অন্যতম উপহার।
সড়ক সম্প্রসারণে সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও এই সড়কে কাজের ধীরগতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নগরের কয়েকজন বাসিন্দা। দীর্ঘদিন ধরে কাজ চলার কারণে সড়কে সবসময় দীর্ঘ যানজট লেগে থাকে বলে অভিযোগ তাদের। সম্প্রসারণ ও সৌন্দর্যবর্ধণ করা হলেও এই সড়ক থেকে হকার ও যত্রতত্র পার্কিংয়ের উপদ্রব কমাতে না পারলে নগরবাসী কোনো সুফল পাবে না বলেও মনে করেন তারা।
সিসিক সূত্রে জানা যায়, গত বছরের নভেম্বরে চৌহাট্টা-জিন্দাবাজার সড়ক সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সড়কের দুই পাশের স্থাপনা ভেঙ্গে সম্প্রসারিত হয় সড়ক। সংস্কার করা হয় সড়কের দুই পাশের ড্রেন ও ফুটপাত। সম্প্রসারণের পর সড়কের মাঝখানে ডিভাইডার বসিয়ে দুই পাশ দিয়ে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
একই সময়ে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে ও সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় এই সড়কের মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুতের লাইন টানা হয়। এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর উপর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন পরিসেবার তারের জঞ্জাল। যদিও ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন প্রকল্পের কাজ শেষেও সড়কের মাঝখানে খুঁটি বসিয়ে বিদ্যুতের লাইন টানা হয়েছে। তবে সড়কের দুই পাশ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বৈদ্যুতিক খুঁটি এবং ট্রান্সমিটারও।
বর্তমানের সড়কের মাঝখানে ডিভাইডারের সৌন্দর্যবর্ধণের কাজ চলছে। ডিভাইডারে বসানো হচ্ছে কারুকার্যময় গ্রিল। লাগানো হচ্ছে বিভিন্ন ফুলের গাছ। যা ইতোমধ্যে নগরবাসীর দৃষ্টি কেড়েছে।
এই সড়কের সৌন্দর্যবর্ধন প্রসঙ্গে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, আমার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিলো সিলেট নগরকে একটি স্মার্ট, আধ্যাত্মিক ও পর্যটন নগর হিসেবে গড়ে তোলা। সে লক্ষ্যেই বন্দরবাজার-জিন্দাবাজার-চৌহাট্টা সড়কের সম্প্রসারণ ও সৌন্দর্যবর্ধণ করা হচ্ছে। আশা করছি ২৬ মার্চের আগেই এই কাজ পুরোপুরি শেষ হবে। আগামী বছর আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী হবে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এই সড়ক হবে নগরবাসীর জন্য অন্যতম উপহার।
তিনি বলেন, এই সড়কের পাশে এবং ফুটপাতে আমরা কোনো হকার বসতে দেবো না। ফুটপাত পথচারীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। যুক্তরাজ্যের আদলে এই সড়কটির সৌন্দর্যবধৃণ কাজ করা হচ্ছে। সম্পূর্ণ কাজ শেষ হলে কেবল নগরবাসী নয়, পর্যটকদেরও আকৃষ্ট করবে এই সড়ক। এই সড়ককে। দেশের একটি মডেল সড়কে রূপ দেওয়া হচ্ছে। এজন্য নগরবাসীও অনেক সহযোগিতা করছেন। এই সড়কের উভয়পাশের ফুটপাতে ফুলের টব বসিয়েও সৌন্দর্যবর্ধণ করা হবে বলে জানান মেয়র।