নিজে বাঁচলে বাপের নাম
মোঃ জাকির হোসেনঃ
বাংলাদেশে রেড জোন, ইয়েলো জোন, গ্রীণ জোন নির্ধারণের মধ্যে কতটুকু সফলতা আসবে? সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় একটি কথা আছে। নিজে বাঁচলে বাপের (পিতার ) নাম। কথাটি এই প্রসঙ্গে বললাম যে কেউ যদি নিজের ভালো নিজে না বুজেন তাহলে সমাজ দেশ ও দশের ভালো কি করে তাঁদের কাছ থেকে আশা করবেন।
পুলিশ-সেনাবাহিনী দিয়ে যে দেশে জনগনকে সামলাতে হিমসিম পোহাতে হয় সে দেশের জনগনকে কিভাবে সচেতন করতে হবে তা একমাত্র উপরওয়ালা জানেন। চলমান ভাইরাস থেকে পরিত্রাণ পেতে নিজে থেকে সাবধানতা অবলম্বন করার বিকল্প নাই।
এক শ্রেণীর লোক বলছেন, সৃষ্টিকর্তার হুকুম হলে চলমান ভাইরাসে আক্রান্ত হবো কথাটির সত্যতা আছে। তবে সৃষ্টিকর্তা মানবজাতীকে চোখ কান বিবেক বুদ্ধি সবই দিয়েছেন আক্রান্ত না হওয়ার জন্য ভিন্ন পন্থা অবলম্বনের কৌশলও বের করে দিয়েছেন।
মানুষ মরনশীল। সবাই এর স্বাদ ভোগ করতে হবে। তাই বলে কি জিবন বাঁচানোর আশা করবেন না। সবই সৃষ্টিকর্তার উপর নির্ভর করে চলার বিধান থাকলেও জিবন বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করা প্রত্যেক নাগরিকের দায়িত্ববোধ থাকা দরকার।তাছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে দুরত্ব বজায় রেখে সচেতনতা গড়ে তুলে পরিস্থিতি অবলোকন করে চলাফেরা অত্যাবশ্যক।
বর্তমানে দুর্যোগময় মুহুর্তে পুরো দুনিয়া যেখানে আতংকিত সেখানে এক শ্রেণির লোক সচেতনতা অবলম্বন না করে সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা করে রয়েছেন।
কথাটি পুরো পুরি ভাবে সঠিক বা সঠিক নয় তা তুলনা করছি না। একমাত্রই ভরসাস্থল সৃষ্টিকর্তা। তবে উছিলা করতে হবে যে কোন পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে।
লকডাউন, রেড জোন, ইয়েলো জোন, গ্রীণ জোন এর ঘোষনা ঘুরপাক খাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে। সবাই নিজ থেকে সচেতন হলে এ সবের দরকার কি? সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে সাবধানতা অবলম্বনের মাধ্যমে চলাফেরা করলে কোবিড-১৯ থেকে রক্ষা পাওয়া কিছুটা সম্ভব। বিশ্বের উন্নত দেশ গুলো তার বাস্তব প্রমান।
সৃষ্টিকর্তার ইশারার উপর গোটা বিশ্ব। সব কিছুই তিঁনির সৃষ্টি। মানবজাতির যত কিছু অবাক করা তৈরি প্রতিটি জিনিসের পিছনে সৃষ্টিকর্তার গোপন অদৃশ্য হাত রয়েছে। মানবজাতি শুধু উছিলা মাত্র।
প্রতিটি দেশের সরকার দেশ ও জনগনের দায়িত্ব নিয়ে, ভালো-মন্দ বিবেচনা করে দেশ পরিচালনা করতে চায়। তাই বলে কি জিবন্ত বাঘের থাবার মুখে পড়ে জিবন দেওয়া মানে সরকারের দোষ। সরকারের ঘোষনার অপেক্ষা না করে প্রতিটি উপজেলা, শহর, গ্রাম পাড়া-মহল্লায় জনসচেতনতা সামাজিক দুরত্ব, হাতে গ্লাভস মুখে মাস্ক বজায় রাখতে পারলে বর্তমান ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়া পুরোপুরি সম্ভব না হলেও কিছুটা সম্ভব।
বাংলাদেশে কবিড-১৯ নিয়ে সরকারের এমপি মন্ত্রীদের সভা সমাবেশের বক্তব্যকে হাই লাইটস বা প্রাদান্য না দিয়ে প্রত্যেক জেলা উপজেলা শহরের জনপ্রতিনিধিরা জন সচেতনতা গড়ে তুলার জন্য দেশের জনগনকে উৎসাহি করে তুলতে পারলেই দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার মূল পন্থা হতে পারে।
তাছাড়া সংঘবদ্ধ ভাবে চলাফেরা কিংবা দু-ব্যক্তি এক সাথে সামাজিক দুরত্ব না মেনে রাস্তাঘাটসহ শহরে যাতায়াত করলে আইনের আওতায় নেওয়া হবে। সঙ্গে জরিমানাও।
এ রকম সাময়িক আইন বা মোবাইল কোর্ট
পরিচালনা আইন পাস করেত পারলে লক ডাউন, রেড জোন, ইয়েলো জোন, গ্রীণ জোন কিছুই চিহ্নিত করার প্রয়োজন হত না।
লেখকঃ যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাংবাদিক ও বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাবের সদস্য।