পঙ্গপালের আক্রমণে খাদ্য সংকটে লাখ লাখ মানুষ
বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ
আফ্রিকা মহাদেশের দ্বিতীয় জনবহুল রাষ্ট্র ইথিওপিয়া। খাদ্য সংকট আর দারিদ্র্য এ অঞ্চলের নিত্যদিনের সঙ্গী। নতুন করে যুক্ত হয়েছে পঙ্গপাল আতঙ্ক। ফসল খেয়ে ফেলা এই পোকার পাল ভয়াবহভাবে হানা দিয়েছে ইথিওপিয়ায়। গেল ২৫ বছরের মধ্যে চলতি বছরই পূর্ব ইউরোপে সবচেয়ে বিপজ্জনক অবস্থায় চলে গেছে পঙ্গপালের আক্রমণ। জানুয়ারি থেকে অন্তত ২ লাখ হেক্টর ফসলি জমি নষ্ট করেছে এই ফসলখেকো পোকা। করোনা মহামারিতে বিপর্যন্ত দেশের মানুষ এরইমধ্যে খাদ্য নিরাপত্তায় ভুগছে।
স্থানীয় এক কৃষক জানান, ৬ হেক্টর জমিতে ফসল বুনেছিলাম। পঙ্গপাল সব খেয়ে ফেলেছে। ৯ টা বাচ্চাকে খাওয়ানোর মতো খাবার আর আমার কাছে নেই। সরকার যদি কিছু না করে, আমাদের আর বাঁচার পথ নেই। বাচ্চাদের খাওয়াতে পারছি না ঠিকমতো। করোনার কারণে স্কুলেও যেতে দিতে পারছি না। ভবিষ্যত কি ওদের?
আরেক কৃষক বলেন, হাসপাতালে গিয়েছি, স্ত্রীর বাচ্চা হবে তাই। সেখান থেকে শুনলাম, আমার ৫ হেক্টর জমিতে চাষ করা সবজি পঙ্গপাল মাত্র ৩ দিনে শেষ করে ফেলেছে। ৬ টা বাচ্চা আমার। কি খাওয়াবো ওদের?
পঙ্গপাল নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা। কাজ করছে ইথিওপিয়ার সরকারও। কিন্তু কোন পদক্ষেই যথেষ্ট হচ্ছে না এ পোকার আক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে।
জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন জানায়, সরকারের সাথে মিলেই কাজ করছি আমরা। এক সপ্তাহে ২ টি বিমান এনেছি, যেগুলো কীটনাশক স্প্রে করছে। ১শ’ টা আলাদা আলাদা টিম কাজ করছে এই পোকা নিয়ন্ত্রণে আনতে। এই সপ্তাহে আর আগামী সপ্তাহে আরো একটি বিমান ও একটি হেলিকপ্টার আসবে।
দেশটির পঙ্গপাল নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বলছে, এ অঞ্চলে পঙ্গপাল নিয়ন্ত্রণে আনাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ইথিওপিয়াতে আমরা সরকারের সাথেই কাজ করছি।
এক বর্গ কিলোমিটারে অবস্থান করা পঙ্গপালের ঝাঁক একদিনে ৩৫ হাজার মানুষের খাবার খেতে পারে। অতিরিক্ত বৃষ্টি আর বন্যার কারণেই ইথিওপিয়ায় পঙ্গপালের আক্রমণ এমন ভয়াবহ হয়েছে। পতঙ্গ গবেষকরা বলছেন, ২০২১ সালে ইথিওপিয়ার পাশাপাশি কেনিয়ায় হানা দেবে পঙ্গপালের ঝাঁক।