পুত্র বিদায়ে বাবার মনজগত ভালো থাকিস বাবা, জগৎ পরিভ্রমণ কর -আাতাউর রহমান
বিদায় মানে শুধু বিচ্ছেদ কিংবা হারিয়ে ফেলা নয়। কিছু বিদায় হাসিমুখে বরণ করে নিতে হয়। আজ তাই আমার স্নেহধন্য বড় পুত্র #রাফিদ_রহমান_সানি’কে নেদারল্যান্ডসের ‘Wittenborg University of Applied Science” এ উচ্চ শিক্ষার্থের জন্য সাময়িক বিদায় দিলাম। সেটি অনেকটা কবির আকুতির মতো- ‘মোছ আঁখি, দুয়ার খোল, দাও বিদায়।’ সেই ধারায় আমিও চোখে জল আর মুখে হাসি নিয়ে পুত্রধনকে- ‘শুভ বিদায়’ জানিয়ে পুত্রের উপর বাহ্যিক নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিলাম!
এ জীবনে কত রকম, কত ধরণ ও কত বিচিত্র নমুনার বিদায়ের ভার বহন করেছি। আজ ১১ নভেম্বর ২০২০খ্রিস্টাব্দ বুধবার ভোর ৬ঃ৪৫ মিনিটের সময় উচ্চ শিক্ষার্থে পুত্রকে দেয়া বিদায়ে মনে পড়ছে পেছনে ফেলে আসা কত নীরব দৃষ্টিকথা! কতই না স্মৃতি! এ বিদায় সাময়িক বিদায়, তাই সাময়িক বেদনার সাথে গৌরব ও প্রাপ্তির আশাটুকুও মিশে আছে। বিদায়ের নির্দিষ্ট সময় পর আসবে তার সফল প্রত্যাবর্তনের প্রতীক্ষা। বিজয়ীর বেশে আবার তাকে(রাফিদ রহমান সানি) স্বাগত জানাবো; এমন প্রত্যাশায় ছেড়ে দিলাম আকাশযানে। ভালো থাকিস বাবা, জগৎ পরিভ্রমণ কর। আলোকিত কর বাসনা!
জীবনভর কত না বিদায় দিতে হয় আমাদের! শৈশবকে বিদায় দিয়ে কৈশোরে পৌঁছাই; কৈশোরকে বিদায় দিয়ে যৌবনে। যৌবন বিদায় হলে প্রৌঢ়ত্ব, আর প্রৌঢ়ত্বকে বিদায় জানিয়ে আসে বার্ধক্য। নিজেও বাবা হারিয়েছি, মা হারিয়েছি। আর একজন বাবা হিসেবে এ বিদায়ে আমারও কিছু দায় আছে। কতটুকু করতে পেরেছি তা তো জানিনে; আর বাকীটুকু ভবিষ্যতের উপর। এ বিদায়ে মনে আওড়াচ্ছে অনেক জিজ্ঞাসা, অনেক প্রশ্ন। কিন্তু কোন উত্তর হাতে নেই। ভবিষ্যত-ই উত্তরের একমাত্র সম্বল। এই ভেবে ভেবে মোবাইলে জয়ন্তিকা আন্তঃনগর সার্ভিস ট্রেনের টিকিট কনফার্ম করলাম। এখন বাড়ি ফেরার পালা। প্রার্থনা করি, আল্লাহ যেন পুত্রকে তাঁর হেফাজতে গন্তব্যে পৌঁছে দেন। তজ্জন্য সবার কাছে দোয়া চাই। সবাইকে মহান প্রভু যেন এর নিয়ামক দান দান করেন। আমীন।