প্রধানমন্ত্রীর পা ছুঁয়ে সালাম করতে চান শেরপুরের সেই ভিক্ষুক
বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ
করোনাভাইরাস মহামারিতে কর্মহীন হয়ে পড়ে মানুষের সহায়তায় ১০ হাজার টাকা দান করা শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার সেই ভিক্ষুক নাজিম উদ্দিন প্রধানমন্ত্রীর পা ছুঁয়ে সালাম করতে চান। রবিবার (১৬ আগস্ট) ১২টায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার হিসেবে নতুন ঘর ও জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে নির্মিত দোকানের চাবি বুঝে পাওয়ার পর অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের নিকট এ কথা বলেন তিনি।
উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের গান্ধীগাঁও গ্রামে নাজিম উদ্দিনের হাতে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার বাড়ি ও জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে দোকানের চাবি হস্তান্তর করেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) আনার কলি মাহবুব। এছাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান এসএমএ ওয়ারেজ নাইমের পক্ষ থেকে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা উপহার দেয়া হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান এসএমএ ওয়ারেজ নাইম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদ, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জয়নাল আবেদীন, থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক প্রমুখ।
গত ২১ এপ্রিল কর্মহীনদের খাদ্য সহায়তার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ত্রাণ তহবিলে গত দুই বছরে সঞ্চয়ের ১০ হাজার টাকা দান করেন ওই ভিক্ষুক। নিজের ভাঙা বসতঘর মেরামত করার জন্য ভিক্ষা করে ওই টাকা জমিয়েছিলেন তিনি। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তার এই দানের খবরটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে এলে তিনি নাজিম উদ্দিনের উদারতায় খুশি হয়ে নিজের তহবিল থেকে উপহার হিসেবে জমি, ঘর ও জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে জীবিকা নির্বাহের জন্য একটি দোকান করে দেয়ার ব্যবস্থা করেন।
নাজিম উদ্দিন যে জমিতে ঘর উত্তোলন করে এতদিন ছিলেন সেটি মূলত সরকারের খাসজমি ছিল। এটি নাজিম উদ্দিনও এতদিন জানতেন না। সরকারের এই খাসজমিও নাজিম উদ্দিনের নামে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সেই জমি কিছুটা সম্প্রসারণ করে ১৫ শতাংশ জমি তার নামে বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। তাকে যেন আর কখনো ভিক্ষা করতে না হয় সেজন্য একটি দোকানও করে দিয়েছে জেলা প্রশাসক। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় হতদরিদ্র নাজিম উদ্দিনের চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়া হয়েছে সরকারের তরফ থেকে। ইতোমধ্যে তার অসুস্থ মেয়ের চিকিৎসাও করা হয়েছে।
বাড়ি পেয়ে নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘মনে করন আমি তো করোনার জন্য ট্যাহাডা দিছি। সেখানে খুশি হইয়া প্রধানমন্ত্রী আমাকে যে উপহার দিছে, আমি খুব খুশি হইছি। ঘরবাড়ি সব দিল। আমি আর কোনো কিছু চাই না। আমি দোয়া করি আল্লাহ তারে (প্রধানমন্ত্রী) দীর্ঘদিন বাঁচায়ে রাখুক। যতদিন বেঁচে থাকে ততদিন আল্লাহ তারে রাজত্ব (সরকার পরিচালনা) করার সুযোগ দিক।’
তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সামনে থেকে দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করে আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুব দয়ালদার মানুষ, তারে একটু দেখবার জন্য আমার মনটা কান্দে। ঘরবাড়ি পাইছি আমি। এহন তার (প্রধানমন্ত্রী) পা ছুঁয়ে সালাম করা আমার খুব ইচ্ছে। তারে দেখা পাইলে আমি তার পা ছুঁয়ে সালাম করব।’
জেলা প্রশাসক (ডিসি) আনার কলি মাহবুব বলেন, ‘আমরা সবাই আন্দিত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আমাদের মহানুভাব ব্যক্তি নাজিম উদ্দিনের হাতে একটি পাকা বাড়ির চাবি তার হাতে তুলে দিলাম।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সামনে থেকে দেখার নাজিম উদ্দিনের ইচ্ছা বিষয়ে তিনি (ডিসি) বলেন, ‘এ বিষয়টা আমার জানা নেই। তিনি যদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চান, তাহলে আমরা সেটা যোগাযোগ করিয়ে দিতে পারি।’