বাইকেই প্রাণ গেলো বাইক ‘মাস্টারের’
সিলেটের ওসমানী উদ্যান ও ড্রিমল্যান্ড পার্কে লোকসমাগম বেশি হয় ‘গেম অব ডেঞ্জার’ নামে রোমাঞ্চকর খেলা দেখার আগ্রহে। সেখানে একটি কাঠের পিঞ্জিরার দেয়ালে তীব্রগতিতে মোটরসাইকেল চালান তিনি। তার এমন সাহসিকতায় হতবাক হয় দর্শক। মোটরসাইকেলের কসরত দেখিয়ে যিনি জীবিকা নির্বাহ করতেন, মোটরসাইলের ওপর যার ছিল অদ্ভুত নিয়ন্ত্রণ সেই রফিকুল ইসলামের (৩৮) মৃত্যু হলো মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিলেট নগরের খাসদবীর পয়েন্টে দুটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনি নিহত হন। রফিকুল সিলেট সড়ক উপজেলার সাহেবের বাজার এলাকার মৃত আব্দুস সালামের ছেলে।
এলাকাবাসী জানায়, প্রতিদিনের মতো কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে নগরের বড় বাজার হয়ে তার মোটরসাইকেল খাসদবীর পয়েন্টে পৌঁছলে বিপরীত দিকে বিমানবন্দর সড়ক থেকে আসা দ্রুতগতির একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই রফিকুল মারা যান।
রফিকুলের একসময়ের প্রতিবেশী এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ক্লিন সিলেট’-এর ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রধান নাজিব আহমদ অপু বলেন, ‘তিনি নগরের লোহারপাড়া এলাকায় আমার প্রতিবেশী ছিলেন। বছর ছয়েক আগে শহরতলির সাহেবের বাজারে বাড়ি বানিয়ে সেখানে চলে গেছেন। ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি দক্ষতার সঙ্গে তাকে মোটরসাইকেল চালাতে, স্কেটিং করতে। দুটি কাজেই তিনি এত দক্ষ ছিলেন, মনে হতো এগুলো তার শরীরেরই অংশ। ’ তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘কে ভেবেছিল এই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়ই তিনি মারা যাবেন! বিষয়টা খুবই মর্মান্তিক। ’
নগরের আম্বরখানার ব্যবসায়ী নাজিকুল রানা বলেন, ‘পার্কের দেয়ালে মোটরসাইকেল চালানোর সময় তাকে দুর্ধর্ষ দেখালেও রাস্তায় তিনি খুব আস্তে ধীরে মোটরসাইকেল চালাতেন এবং দুর্ঘটনার সময় তিনি ৮০ সিসির গাড়ি চালাচ্ছিলেন। ’
দুর্ঘটনায় মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশের বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো. মাইনুল জাকির। তিনি বলেন, ‘দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে একজন নিহত হন। আহত হয়েছেন আরো দুজন। ঘটনাস্থল থেকে হতাহতের সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দুটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। ’