বিরতির পর নতুন গান নিয়ে আসছেন পথিক নবী
বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্ক:
পেশাদার গানের জগতে কয়েক বছর পার করার পর পথিক নবী ভাবলেন তাঁকে মিউজিক্যালি আরও বেশি শিক্ষিত হতে হবে। তাঁর মনে হলো অন্যদের কাছ থেকে পিছিয়ে আছেন। গানের সঙ্গে প্রযুক্তির যে যোগসূত্র, তার সঙ্গেও নিজেকে মানিয়ে নিতে হবে। সংগীতায়োজনের কাজ শিখতে হবে। তাই নিজের ইচ্ছা থেকেই নতুন গান প্রকাশ থেকে দূরে সরে গেলেন। গতকাল রোববার দুপুরে এভাবেই বললেন ‘আমার একটা নদী ছিল’–খ্যাত সংগীতশিল্পী পথিক নবী।
ঢাকার মিরপুর ডিওএইচএস এলাকায় পরিবার নিয়ে থাকেন পথিক নবী। স্ত্রী, এক মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে ভালোই আছেন বলে জানালেন। শরীরে ডায়াবেটিস বাসা বেঁধেছে। তবে এ নিয়ে মোটেও বিচলিত নন পথিক নবী। বললেন, ‘খাওয়া-দাওয়া নিয়ন্ত্রণে রাখলে আর নিয়মিত ব্যয়াম করল কোনো সমস্যাই না। আমি সব মেনে চলছি।’
সংগীতের যে শিক্ষাটা নিতে গান প্রকাশ থেকে দেড় দশক ধরে দূরে আছেন, সেই শিক্ষাটা ভালোই হয়েছে মনে করছেন পথিক নবী। তবে এখনো শিখছেন। বললেন, ‘আগে যন্ত্র সম্পর্কে খুব একটা ধারণা না থাকলেও এই সময়টাতে আমি তা আয়ত্ত করে নিয়েছি।’ এখন সব যন্ত্র বাজাতে না পারলেও ভালো ধারণা আছে বলে জানালেন। পাশাপাশি গান লেখার কাজও করে গেছেন বিরতিবিরতিতে। ঘরের মধ্যে একটা বড় লাইব্রেরি গড়ে তুলেছেন। সেখানে দিনের একটা সময় কাটান।
পথিক নবীর গাওয়া প্রথম অ্যালবাম নষ্ট নগর নষ্ট স্বভাব। ১৯৯২ সালে রাশেদ ইলেকট্রনিকস থেকে প্রকাশিত এই অ্যালবামের সময়টায় তিনি নবী নামে পরিচিত ছিলেন। এই অ্যালবাম প্রকাশের বছর তিনেক পর প্রথম কনসার্টে গান করেন তিনি।
পরিবার ও বন্ধুমহলের নবী অচেনা পথিক অ্যালবামের মধ্য দিয়ে পথিক নবী নামে পরিচিতি পাওয়া শুরু করেন। ২০০৩ সালে প্রকাশিত এই অ্যালবামের ‘আমার একটা নদী ছিল জানল না তো কেউ’ গানটি দেশের আনাচকানাচে বাজতে শুরু করে। এরপর পথিক নবীকেও আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। এই শিল্পীর গাওয়া আরেকটি গান ‘পাখি উড়িয়া উড়িয়া যায়’ সবার কাছেই চেনা। বোহিমিয়ান জীবনযাপনে অভ্যস্ত এই শিল্পী তিন বছরে একক, মিক্সডসহ ৩৫টি অ্যালবামে গান গেয়েছেন। তাঁর বাকি একক অ্যালবাম হচ্ছে কষ্টের গায়ে লাল জামা ও বাঁকা চাঁদ।
পথিক নবী জানালেন, নতুন গান প্রকাশ থেকে দূরে থাকলেও নিজের মতো করে স্টেজ শো করে গেছেন। গানই তাঁর জীবন, এই গান থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া সম্ভবও না। বললেন, ‘আমি নতুন ২০-২৫ টা গান তৈরি করেছি। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তবেই গানগুলো প্রকাশ করব। বহু বছর যে গান প্রকাশ করিনি, তা কিছুটা হলেও পুষিয়ে দিতে পারব।’
করোনার এই সময়টায় ঘরবন্দী থাকলেও নতুন গান লিখছেন। বই লেখারও কাজও করছেন। বাচ্চাদের সময় দিচ্ছেন। ঘরের কাজে সহযোগিতাও করছেন বলে জানালেন।