বিয়ানীবাজারের আকাখাজনায় চাচীর অবৈধ সম্পর্ক দেখে ফেলায় খুন হয় শিশু সায়েল
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ারবাজার ইউনিয়নের উত্তর আকাখাজনা গ্রামে দেবর-ভাবীর পরকিয়া প্রেমের বলী হয়েছে সাড় ৩ বছরের শিশু সায়েল আহমদ সোহেল। আপন চাচীর অবৈধ সম্পর্ক দেখে ফেলায় নৃশংসভাবে ছোট শিশুকে হত্যা করে গুম করার উদ্দেশ্যে চালের ড্রামে ডুকিয়ে বাথরুমে লুকিয়ে রাখে। পরে অনেক খোঁজাখুজির পর শিশুর লাশ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে চালের ড্রামের ভেতর থেকে ৩ বছর বয়সী এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসময় হত্যার সাথে জড়িত চাচী সুরমা বেগম (৩৮) ও পরকিয়া প্রেমিক নাহিদ আহমদকে (২৬) ঘটনাস্থল থেকে আটক করে পুলিশ।
শিশু সায়েল আহমদ সোহেল উত্তর আকাখাজানা গ্রামের খছরু মিয়ার ছেলে। সে রবিবার সকাল ৬টা থেকে নিখোঁজ ছিল। পরে বিকেলে খছরু মিয়ার ছোটভাই রুনু মিয়ার স্ত্রী সুমা বেগমের ঘরের চালের ড্রামের ভেতরে শিশুটিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ উত্তর আকাখাজনা গ্রামের রুনু মিয়ার স্ত্রী সুরমা বেগম ও চারখাই ইউনিয়নের কামাল মিয়ার ছেলে নাহিদুল ইসলামকে আটক করেছে।
বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল (৭ জুন) রবিবার তারিখ ভোরে সায়েল আহমদ সোহেল ও আরিফ আহমদ (৫) প্রতিদিনের মত আম কুড়াঁনোর জন্য চাচীর বসত ঘরের গাছের নিচে যায়। বড় ছেলে আরিফ আহমদ ঘরে ফিরে আসে কিন্তু ছোট ছেলে ভিকটিম ঘরে না আসায় তার পিতা খসরু মিয়া আশপাশে অনেক খোজাখুজি ও এলাকার মসজিদে মাইকিং করেন। একপর্যায় সন্ধ্যার দিকে ওই শিশুর পিতা খসরু মিয়া তার ভাইয়ের স্ত্রী সুরমা বেগমকে ছেলে সায়েলের কথা জিজ্ঞেস করলে তার কথাবার্তা ও অসংলগ্ন আচরণে অস্থির ভাব থাকায় এবং তার ঘরের দরজা জানালা সারাদিন বন্ধ থাকায় শিশুটির পিতার সন্দেহ হয়।
পরে শিশুর পিতা খসরু মিয়া স্থানীয় লোকজনের সহায়তা সুরমা বেগমের বসত ঘরে প্রবেশ করে খোজাঁখুজির একপর্যায়ে তার বসত ঘরের বাথরুমের মধ্যে প্লাস্টিকের ড্রামে কম্বল দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় তার ছেলের লাশ পাওয়া যায়। পরে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে ভিকটিমের চাচী সুরমা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ঘটনার কথা স্বীকার করে এবং আসামী নাহিদুল ইসলাম এর সাথে তার পরকিয়া সর্ম্পকের কথা স্বীকার করেন।
৭ জুন রবিবার আনুমানিক ভোর ৬টার সময় আসামী নাহিদুল ইসলাম ও সুরমা বেগম অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকাবস্থায় ভিকটিম সায়েল আহমদ সোহেল তাদের অসামাজিক কার্যকলাপ দেখে ফেলে। এবং শিশু সায়েল ঘটনা সবাইকে বলে দেবে বলে চিৎকার করে। তাদের অসামাজিক কার্যকলাপের বিষয়টি যাতে ভিকটিমের পিতাসহ লোকজন জানতে না পারে সেজন্য চাচী সুরমা বেগম ও পরকিয়া প্রেমিক আসামী নাহিদুল ইসলাম ঘরে থাকা একটি মোটা গাছের ডাল দিয়া শিশু সায়েল আহমদ সোহেল এর নাকে ও মুখে আঘাত করলে শিশু সায়েল জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে যায়।
পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে নাকে মুখে চাপ দেয়। পরে শিশুটির লাশ গুম করার জন্য ঘরের গোসল খানায় প্লাস্টিকের ড্রামের ভিতর কম্বল দিয়ে মুড়িয়ে রাখার কথা পুলিশের স্বীকার করে। মৃত শিশুর পিতা খসরু মিয়া থানায় বাদী হয়ে বিয়ানীবাজার থানায় মামলা করেছেন। মামলা নং-০৬।