বড়লেখায় প্রবাসীকে গুম, হত্যা ও মামলার ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে গুম, হত্যা, হামলা, মামলার এবং মানসিক চাপ প্রদানের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন দুবাইপ্রবাসী সাবুল আহমদ।
শুক্রবার (২৮ মে) বেলা আড়াইটায় বড়লেখা সদর ইউপি হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে বড়লেখা পৌরসভার গাজিটেকা আইলাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল খালিকের ছেলে সাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে তিনি এসব অভিযোগ তুলেছেন। সাবুল আহমদ বড়লেখা সদর ইউপির কেছরিগুল গ্রামের বাসিন্দা সাজ্জাদ আলীর ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে সাবুল আহমদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান তাঁর চাচাতো ভাই ফরহাদ হোসেন দুলাল। এসময় প্রবাসী সাবুল আহমদ ছাড়াও তাঁর বড়ভাই আবুল হোসেন আবু, ছোটভাই সাইফুল ইসলাম, আব্দুল কাদির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, ‘আমি একজন মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী। ২০০২ সাল থেকে প্রবাসে থাকি। মাতৃভূমির টানে প্রতিবছর নিজের বাবা-মা, ভাই-বোন, স্ত্রী ও দুই কন্যা এবং আত্মীয় স্বজন এবং এলাকার মানুষকে দেখতে দেশে আসি। করোনা পরিস্থিতির কারণে সময়মতো কর্মস্থলে যেতে পারিনি। প্রবাস থেকে দেশে আসার পর বড়লেখা থানার গাজিটেকা আইলাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল খালিকের ছেলে সাইদুল ইসলামের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। সেই সুবাধে তিনি আমার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ঋণ নেন। এরমধ্যে সাড়ে ৩ লাখ টাকা ফেরত দিলেও বাকি দেড় লাখ টাকা এখনও ফেরত দেননি।
তিনি প্রবাস থেকে দেশে আসলে আমাকে নিয়ে বিভিন্নস্থানে ঘুরতে যেতেন। সাম্প্রতিক সময়ে আমি তার সম্পর্কে ভয়ংকর কিছু তথ্য জানতে পেরে দূরত্ব বজায় রেখে চলার চেষ্টা করি এবং পাওনা টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য তাগিদ দেই। তিনি বারবার সময় নিলেও আমার পাওনা টাকা ফেরত দেননি। সম্প্রতি তিনি আমাকে সিলেট নিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করলে আমার সন্দেহ হয়। পরে আমি জানতে পারি তিনি আমাকে সিলেট নিয়ে ফাঁসিয়ে আমার পাওনা টাকা আত্মসাতের পরিকল্পনা করছেন। তিনি আমাকে সিলেট নিতে না পেরে হোয়াটঅ্যাপে ভয়েস পাঠিয়ে বলেন, তুই সিলেট ডিবি অফিসে গিয়ে আমার সম্পদ উদ্ধার করতে চাস না? একপর্যায়ে তিনি আমাকে হুমকি দিয়ে বলেন, সিলেটে তোর বাসা থেকে ডিবি ২৮০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে। এখন বাঁচবে কেমনে? অথচ সিলেটে আমার কোনো বাসা নেই। সিলেটে আমার বাসা থাকলে অবশ্য আমার বিরুদ্ধে মামলা হতো। এছাড়া তিনি আমাকে বলেন, ঢাকায় নাকি মনির নামে একজন লোক খুন হয়েছে, সিআইডির সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়েছে। আমি নাকি সেই খুনের সঙ্গে জড়িত, আমি নাকি তার কাছ থেকে দেড় কোটি টাকা ঋণ নিয়েছি। আমি তার কথামতো না চললে তিনি আমাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে সারাজীবন জেলে ঢুকিয়ে রাখবেন এবং নানাভাবে হুমকি, ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। এছাড়া তিনি বিভিন্ন ফেক আইডি থেকে আমার ও বিভিন্ন ব্যক্তির নামে অসত্য মানহানিকর তথ্য প্রচার করেছেন। এই ঘটনায় আমি আতঙ্কিত হয়ে গত ২৫ মে ফেসবুকে লাইভে ঘটনার আংশিক ব্যাখা করি এবং পরিবেশমন্ত্রী, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদেরকে বিস্তারিত জানাই। প্রাণনাশের ভয়ে গত ২৫ মে বড়লেখা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (নং-১২২০) করি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাইদুল ইসলাম শুক্রবার বিকেলে বলেন, হুমকিধমকির বিষয়টি সঠিক নয়। বরং আমি সাবুল আহমদের কাছে টাকা পাই।
বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার বলেন, হুমকি-ধমকির ঘটনায় এক প্রবাসী থানায় জিডি করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।