যদি রাত পোহালে শোনা যেত
সুব্রত বিশ্বাস :
‘যদি রাত পোহালে শোনা যেত,
বঙ্গবন্ধু মরে নাই।
যদি রাজপথে আবার মিছিল হতো,
বঙ্গবন্ধুর মুক্তি চাই।
তবে বিশ্ব পেত এক মহান নেতা,
আমরা পেতাম ফিরে জাতির পিতা।’
হাসান মতিউর রহমানের লেখা, মলয় কুমার গাঙ্গুলীর সুর করা এবং সাবিনা ইয়াসমিনের কণ্ঠে এই গানটি শুধু একটি গান নয়, কোটি কোটি বাঙালির মনের কথা। আজ থেকে ৪৫ বছর আগের এই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করেছিল কিছু বিপথগামী সেনাসদস্য। ঘাতকরা সেদিন নারী ও শিশুদেরও রেহাই দেয়নি, যা ইতিহাসের এক কলঙ্কময় অধ্যায়।
১৫ আগস্টের হৃদয়বিদারক ঘটনা যদি না ঘটত, তাহলে বিশ্বদরবারে বহু আগেই আমরা একটি মর্যাদাপূর্ণ জাতি হিসেবে পরিগণিত হতে পারতাম। তবে যে উদ্দেশ্য নিয়ে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল, ঘাতকদের সেই উদ্দেশ্য পুরোপুরি পূরণ হতে পারেনি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা প্রাণে বেঁচে যাওয়ায়। তাই হয়তো ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলাসহ এ পর্যন্ত প্রায় ২১ বার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মেরে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছিল ষড়যন্ত্রকারীরা। কোটি কোটি দেশবাসীর দোয়া ও আশীর্বাদের কারণেই হয়তো শেখ হাসিনাকে বারবার মেরে ফেলার উদ্যোগ ভেস্তে গেছে।
বঙ্গবন্ধু হত্যার সব দুরভিসন্ধির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদী চক্র এবং একাত্তরের পরাজিত শক্তির গোপন আঁতাতের কথা আজ দেশের মানুষের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে। আজ মানুষ বুঝতে পেরেছে বঙ্গবন্ধু হত্যার উদ্দেশ্য ছিল বাঙালি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে বাংলাদেশের নাম চিরতরে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে মুছে ফেলা। কিন্তু তাদের সেই চক্রান্ত বাস্তবে রূপ লাভ করতে পারেনি।
জাতীয় শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে এবং কাক্সিক্ষত অর্থনৈতিক মুক্তি এনে দিতে পারলেই জাতির পিতার বিদেহী আত্মা শান্তি পাবে। এ লক্ষ্যেই সবাইকে কাজ করে যেতে হবে।
সুব্রত বিশ্বাস : কাউন্সিলর, ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়