যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরেই জনসমাগমে সাকিব; তোয়াক্কাই করলেন না স্বাস্থ্যবিধি
বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ
করোনার সময়টায় বিদেশ থেকে ফেরা যেকোনো ব্যক্তিরই কোয়ারেন্টিনে থাকা বাধ্যতামূলক। সাকিব আল হাসানের ক্ষেত্রে একটু ব্যতিক্রম ঘটনাই ঘটল। বাঁহাতি অলরাউন্ডার যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরেছেন কাল বৃহস্পতিবার রাত দুইটায়। দেশে ফেরার ৯ ঘণ্টার মধ্যে সাকিব এলেন গুলশানে একটি সুপারশপ উদ্বোধন করতে।
আজ বেলা ১১টায় গুলশানে সুপারশপ ‘জয়’–এর সামনে যেতেই দেখা গেল মানুষের ভিড়। সাংবাদিক, আয়োজক আর উৎসুক জনতা সামলাতে ভীষণ হিমশিম খেতে হলো নিরাপত্তাকর্মীদের। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এলেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি—সাকিব আল হাসান। মানুষের ভিড় ঠেলে কোনোভাবে ঢুকে ফিতা কাটলেন, উদ্বোধন করলেন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানটি। আয়োজকদের অনুরোধে মুখের মাস্কটিও একবার খুলতে হলো তাঁকে। জনাকীর্ণ অনুষ্ঠানে কারও মুখে মাস্ক দেখা গেল, কেউ আবার তোয়াক্কাই করলেন না স্বাস্থ্যবিধি। অবশ্য তাঁদের কাঠগড়ায় তোলার আগে প্রশ্নের তিরটা যায় আয়োজক ও প্রধান অতিথির দিকে।
গত কিছুদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাধিকবার নির্দেশ দিয়েছেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে। সেটির অংশ হিসেবে বিদেশ থেকে আগত ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিন যথাযথভাবে পালনের আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। সাকিব কিংবা এই অনুষ্ঠানের আয়োজকেরা প্রধানমন্ত্রীর সেই নির্দেশ কতটা মানলেন, প্রশ্ন থেকে গেল। বাংলাদেশ অলরাউন্ডার কাল গভীর রাতে ফিরেছেন দেশে। স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী, তাঁর হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার কথা।
বিদেশ থেকে আগত ব্যক্তিদের বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষা করা হয় না। সাধারণত করোনা পরীক্ষার কাগজ ও তাপমাত্রা নির্ণয় করে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরের চিকিৎসক মোহাম্মদ শাহরিয়ার সাজ্জাদ প্রথম আলোকে বললেন, ‘বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষা হয় না বা ব্যবস্থা নেই। আগতদের কাগজ দেখা হয়, তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হয়। কাগজে দেখা হয় ৭২ ঘণ্টা আগে নেগেটিভ হয়েছিল কি না। নেগেটিভ হলে হোম কোয়ারেন্টিন, পজিটিভ হলে হাসপাতালে পাঠানো হয়। আর কোনো কাগজ না থাকলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করা হয়।’
সাকিব নিশ্চয়ই যুক্তরাষ্ট্র থেকে নেগেটিভ সনদ নিয়েই উড়ানে চেপেছেন। দেশে ফিরেই তাঁর হোম কোয়ারেন্টিনেই থাকার কথা। গত সেপ্টেম্বরে যখন যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনি ফিরেছিলেন, তখনো নিয়মটি তিনি ভালোভাবেই মেনেছিলেন। দেশে ফিরে আবার পরীক্ষা করিয়ে কোভিড নেগেটিভ হয়ে চলে গিয়েছিলেন বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি)। বিকেএসপিতে অনেকটা সঙ্গনিরোধ থেকেই নিয়েছিলেন প্রস্তুতি। গত মার্চে করোনার প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার পর যখন বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে গেলেন, তখন বিমানবন্দর থেকে সরাসরি বাসায় যেতে পারেননি। যুক্তরাষ্ট্রের একটি হোটেল দুই সপ্তাহের কঠিন কোয়ারেন্টিন করতে হয়েছে তাঁকে।
শুধু সাকিব কেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বিদেশি কোচিং স্টাফের যিনিই ঢাকায় এসেছেন, সবাই কোয়ারেন্টিনের নিয়ম যথাযথ মেনেছেন। স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি জানা আছে বলেই কিনা আজ জনাকীর্ণ অনুষ্ঠানে সাকিবও খুব একটা স্বস্তিতে ছিলেন না। কোনোভাবে ফিতা কেটেই বিদায় নেন অনুষ্ঠান থেকে।