রেড নয় বিয়ানীবাজার এখন করোনার “ডেঞ্জার জোন”
মুকিত মুহাম্মদঃ
বিয়ানীবাজার উপজেলা এখন করোনার ‘রেড জোন’ নয় রীতিমতো “ডেঞ্জার জোন”। গতকাল পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ৮৩ জনের। গত এক সপ্তাহে শুধু সিলেটেই করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় এক হাজার। বিয়ানীবাজার উপজেলায়ও আশংকাজনক হারে বাড়ছে করোভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। গত কয়েকদিনে এ উপজেলায় নতুন করে প্রায় অর্ধশত করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এসকল রোগীর বেশিরভাগই আক্রান্ত হয়েছেন নমুনা দেয়ার পর হোম কোয়ারান্টাইন না মেনে অবাধে চলাচলকারীদের সংস্পর্শে। সচেতন মহলের অভিমত, করোনা বিষয়ক সংশ্লিষ্ট প্রশাসন হোম কোয়ারান্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের কঠোর নজরদারিতে রাখলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হত না।
অনুসন্ধানে জানা যায়, করোনা শনাক্ত হওয়া রোগীদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিরা, বিভিন্ন জেলা থেকে আগতরা ও করোনার উপসর্গযুক্তদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য প্রতিনিয়ত সংশ্লিষ্ট ল্যাবে প্রেরন করা হচ্ছে। নমুনা নেয়ার পর ওই সকল ব্যক্তিদের রিপোর্ট আসার পূর্ব পর্যন্ত হোম কোয়ারান্টাইনে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে। কিন্তু পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন তা আর কার্যকর নজরদারিতে রাখেনা। সে সুযোগে বেশিরভাগ লোকই হোম কোয়ারান্টাইনের নির্দেশনা না মেনে অবাধ যাতায়াতের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন মানুষের সংস্পর্শে আসছে। পরবর্তীতে দেখা যায় এসকল লোকদের মধ্যে যাদের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসলো তাদের সংস্পর্শে আসা লোকদের মাঝেও করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে। ওই সকল লোকদের যদি কার্যকরভাবে হোম কোয়ারান্টাইনে রাখা যেত তাহলে তাদের মাধ্যমে অন্যদের সংক্রমণের ঝুঁকি থাকতো না।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা নেয়ার পর সোনালী ব্যাংক বৈরাগীবাজার শাখার ম্যানেজার ও একই শাখার সিনিয়র অফিসার, পূবালী ব্যাংক বারইগ্রাম বাজার শাখার ম্যানেজার এবং সর্বশেষ ইএনও অফিসের স্টাফ আফজাল হোসেনও হোম কোয়ারান্টাইন না মেনে নিয়মিত অফিস করেছিলেন। পরবর্তীতে তাদের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজেটিভ আসে। এ অবস্থায় তাদের সংস্পর্শে কারা এসেছিলেন তা সম্পূর্ণভাবে নির্ণয় করা দুষ্কর। এক্ষেত্রে সংস্পর্শে আসাদের মধ্য থেকে যাদেরকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে তাদের মধ্যেও অনেকেরই করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে। আর এভাবেই মহামারী করোনার সংক্রমণ বিয়ানীবাজারে সম্প্রতি আশংকাজনক হারে বাড়ছে বলে সচেতন মহল মনে করেন।
বিয়ানীবাজার উপজেলার সচেতন মহলের দাবী মহামারী করোনার সংক্রমণ রোধে প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা হোম কোয়ারান্টাইনে থাকাদের কঠোর নজরদারির মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বাধ্য করনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করতে আরও সচেষ্ট ভূমিকা পালন করবেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম আলী খান বলেন, করোনার এই দূর্যোগময় মুহূর্তে আমাদের প্রত্যেকেই স্ব স্ব অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। অন্যথায় করোনার ভয়াবহ কুফল আমাদের সবাইকে ভোগাবে। তিনি বলেন, হোম কোয়ারান্টাইনে থাকারা রিপোর্ট আসার পূর্ব পর্যন্ত (নূনতম ১০ দিন) স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মেনে চলতে হবে। যারা হোম কোয়ারান্টাইন না মেনে অবাধে চলাচল করেন তাদের তথ্য পেলে আমরা প্রশাসনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেবো।