লকডাউনঃ ২০ টাকার রিকশা ভাড়া এখন ৪০০!
বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ
রাজধানীর বেশিরভাগ মানুষেরই চলাচলের প্রধান মাধ্যম গণপরিবহন। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় গত সোমবার (২৮ জুন) থেকে সীমিত পরিসরে ১ জুলাই পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।
প্রজ্ঞাপনে পণ্যবাহী যানবাহন ও রিকশা ব্যতীত সব গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়।
তবে গণপরিবহণ বন্ধ রেখে চালু রাখা হয় সরকারি-বেসরকারি অফিস।
এর কারণ হিসেবে জানা যায়, অর্থবছরের শেষ সময় হওয়ায় লকডাউনের সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আনা হয়। তবে ১ জুলাই থেকে টানা সাতদিনের সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হবে।
ইতোমধ্যে সাতদিনের ‘কঠোর লকডাউন’ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। ওই সাতদিন সব অফিস, যানবাহন ও দোকানপাট বন্ধ থাকবে।
সরকারি ‘বিধি-নিষেধ’ এবং মানুষের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে মাঠে টহলে থাকবে সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, র্যাব এবং আনসার সদস্যরা। অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বিধিনিষেধের সময় বাড়ির বাইরে যাওয়া যাবে না। এরই মধ্যে পুলিশ জানিয়েছে, বিনা কারণে বাড়ির বাইরে গেলেই গ্রেফতার করা হবে।
বুধবার (৩০ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় অফিসগামী মানুষের দুর্ভোগ। সকাল থেকে রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও গাড়ি পাননি অফিসগামীরা। অনেকে উপায় না পেয়ে হেঁটেই গন্তব্যে রওনা হন।
এদিকে বাস না থাকার সুযোগটা কাজে লাগাচ্ছেন সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালকরা। স্বল্প দূরত্বে ভাড়া চাইছেন দ্বিগুণ-তিনগুণ। বাধ্য হয়েই অনেক যাত্রী ১০০ টাকার ভাড়া ৫০০ টাকা দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন। তাও আবার এক সিএনজিতে চারজন বসে গাদাগাদি করে।
এদিকে গণপরিবহণের সংকটের সুযোগে সড়কে দাপট দেখাচ্ছে রিকশা। সুযোগ পেয়ে ২০ টাকার ভাড়া হাঁকছেন ৪০০ টাকা। পকেট কাটা যাচ্ছে সাধারণ মানুষের। গাড়ি না পেয়ে অনেকে বাড়তি ভাড়া দিয়েই গন্তব্যের দিকে রওনা হচ্ছেন।
বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মী শরীফ আশরাফ বলেন, সকালে অফিসে যাওয়ার উদ্দেশে রাস্তায় নেমেই হতভম্ব হই। শুধু মানুষ আর মানুষ। কোনো বাস নেই। কোনো সিএনজি বা রিকশা দেখলেই হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন সবাই। রামপুরা ব্রিজ থেকে কিছুটা হেঁটে মেরুল বাড্ডা থেকে শাহজাদপুর পর্যন্ত রিকশায় এসেছি। ৫০ টাকার ভাড়া দিতে হল ১০০ টাকা।
আরেকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী ওয়াসিফ করিম বলেন, অফিসের উদ্দেশে সকাল ৮টায় বের হয়ে কোনো বাস পাইনি। মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর থেকে কারওয়ান বাজার পর্যন্ত রিকশায় ভাড়া চায় ৩৫০ টাকা। যেখানে এমনি সময় ফার্মগেট পর্যন্ত যেতে রিকশা ভাড়া নেয় ৬০-৭০ টাকা। সেখানে কয়েকগুন ভাড়া দাবি করেছেন তারা। পরে হেঁটেই গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হই।
এদিকে কেউ কেউ পিকআপে উঠেও অফিসে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। এভাবেই রাজধানীতে অফিসগামী মানুষ দুর্ভোগে পোহাচ্ছেন।