লকডাউন: লঞ্চের ছাদেই কাটবে রাসেলের বাসর রাত
বিয়ানীবাজারের ডাকঃ
দেশজুরে লকডাউন শিথিলতা শেষ হচ্ছে বৃহস্পতিবার রাতেই। শুক্রবার ভোর থেকেই শুরু হচ্ছে কঠোর লকডাউন। যারা ইতিমধ্যেই গ্রামে ঈদ উদযাপন করতে গিয়েছিলেন তারা বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) রাতেই ঢাকায় ফেরার আপ্রান চেষ্টা করছেন। কারণ শুক্রবার সকাল থেকে বন্ধ থাকবে গণপরিবহন চলাচল। কঠোর লকডাউনের এই খবর পৌছেছে ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেলসম্যান রাসেলের কানেও। তাই তো বিয়ের দিনই স্ত্রীকে নিয়ে ছুটেছেন ঢাকার উদ্দেশ্য।
যদিও রাসেলের বিয়ের কথা চলছিল আগে থেকেই। গত ঈদে হওয়ার কথা ছিল বিয়ে। কিন্তু করোনার কারণে তা হয়নি। তাই এবার ঈদে সেই বিয়ে সারেন। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা বলতে আকদ পর্যন্ত হযেছে। লকডাউনের কারণে আর আতিথেয়তার আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। ছুটতে হয়েছে কর্মস্থলে। সেখানেও বিপত্তি। নতুন বউ নিয়ে রাসেলের যাওয়ার ইচ্ছা ছিল লঞ্চের কেবিনে। তাও হলো না। অস্বাভাবিক যাত্রীর চাপে শেষে লঞ্চের ছাদেই ঠাঁই হয়েছে নবদম্পতির। বিয়ের পর রাসেলের বাসর রাতও কাটবে সেই লঞ্চের ছাদেই। বরিশাল থেকে ঢাকাগামী পারাবত-১০ লঞ্চের ছাদে নবদম্পতির এ চিত্র দেখা যায়।
রাসেল বলেন, চেষ্টা করছিলাম লঞ্চে একটি কেবিন সংগ্রহ করার। কিন্তু পাইনি। নতুন বউ নিয়ে এভাবে খোলা আকাশের নিচে যেতে কেমন দেখায়! আর একটা দিন পরে লকডাউন দিলে আর সমস্যা হতো না। না পারলাম কোরবানির মাংস খেতে না পারলাম বিয়েটা ভালোভাবে করতে।
রাসেলের বোন পারভিন জানান, তাদের বাড়ি জেলার উজিরপুর উপজেলার ওটরা ইউনিয়নে। বিয়ের কথাবার্তা ঠিক ছিল গত ঈদে। কিন্তু তখন লকডাউন পড়বে দেখে বিয়ের আয়োজন করা হয়নি। এরপর উভয় পরিবার মিলে সিদ্ধান্ত নেয় কোরবানির ঈদে। এজন্য ঈদের পরের দিন বিয়ের আয়োজন করা হয়। গতকালও জানতাম না শুক্রবার (২৩ জুলাই) থেকে আবার লকডাউন দিবে। আজ দুপুরে শুনেছি তখন কেবল আকদ হয়েছে। কিন্তু লকডাউন ঘোষণার পরপরই খাওয়া-দাওয়া না করেই নতুন বউ নিয়ে ঢাকা রওনা দিয়েছি। কিছু করার নেই।