শুরুর বিপর্যয় ভুলে জয়ের স্বপ্নে বিভোর ইংল্যান্ড
অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অ্যাশেজ সিরিজে শুধুমাত্র নাস্তানুবুদই হয়নি উপরন্তু তিন ডিপার্ট্মেন্টে অসহায় আত্নসর্মপন করেছিল থ্রি লায়নরা । যেখানে জেমস এন্ডারসন ও ব্রডের অভিজ্ঞতাও তাদেরকে বাচাতে পারেনি চরম লজ্জার হাত থেকে। সেই দুঃখ থেকে ইংল্যান্ড ওয়েস্টিন্ডিজের সফরে করতে আসে তাদের সেরা দুই বোলার ছাড়াই।
রোচ ও সিলসের বোলিং দিশেহারা ইংল্যান্ড টপ অর্ডার
ব্রড-এন্ডারসন বিহীন ইংল্যান্ড তাদের নুতুন দিগন্তের শুরু করে ওয়েস্টিন্ডিজের চ্যালেঞ্জিং কন্ডিশনে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়ে। প্রথম দিন ইংলিশ দলের প্রানভোমরা জো রুটকে শুরু থেকেই নড়বড়ে লাগছিল । অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা তাকে বার বার স্লিপে খেলিয়ে তার উইকেট বাগিয়ে নিয়েছিলেন। সেই টোটকা কিমার রোচও কাজে লাগানোর চেস্টা করছিলেন। তার সতীর্থ যদি ক্যাচ মিস না করতেন তাহলে হয়ত আরেকবার তাকে সেই জায়গায় আটকে দিতে পারতেন। রুটের নার্ভাসনেসের সুযোগ নিয়ে রোচ সেই একই ওভারেই তার অফ স্টাম্প বরাবর ইংসুয়িংয়ের ফাঁদ পাতলেন। আর সেই বলটি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ইংলিশ অধিনায়ক তার অফ স্টাম্প হারিয়ে বসলেন। সেই জায়গা থেকে মনে হচ্ছিল ইংল্যান্ড হয়ত ১০০ রানের ভেতরই গুটিয়ে যাবে।
জনি বেয়ারস্টোর ব্যাটে চড়ে ইংল্যান্ডের প্রতিরোধ
নবাগত সিলস ও কিমার রোচের দাপুটে বোলিংয়ে রুট বাহিনী ৪৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে যখন কাঁপছে ঠিক তখনই ইংল্যান্ডের ত্রাতা হিসিবে আগমন ঘটে জনি বেয়ারস্টো। বেয়ারস্টো তার লড়াকু ইংনিসে শুধুমাত্র তার ডুবতে থাকা টেস্ট ক্যারিয়ারকে পালের হাওয়াইই দেননি বরং ইংল্যান্ডের ডুবতে থাকা তরীকে দিয়েছেন এক নুতুন দিশা।
ইংনিসের শুরুর দিকে তার ডিফেন্স কিছুটা নড়বড়ে মনে হলেও সময়ের সাথে সাথে ওয়েস্টিইন্ডিজের ক্লান্ত বোলার ও পুরনো বলকে পুজি করে আস্তে আস্তে ইংল্যান্ডকে সন্মানজনক অবস্থাতে নিয়ে যান। বেন স্টোকস নিয়ে ৬৭ রানের জুটিতে তিনি প্রাথমিক প্রতিরোধ গড়ে তুলেন। বেন স্টোকস ৩১ রানে সাজঘরে ফিরে যাওয়ার পর জশ বাটলারের বদলি হিসেবে দলে জায়গা পাওয়া বেন ফোকসের সাথে নিয়ে ইংনিসের নিয়ন্ত্রন নেওয়ার চেস্টা করেন। ৯৯ রানের পার্টনারশিপে দলের শিরদাড়াকে একটু শক্ত করেন। একে একে সবাই আউট হয়ে গেলেও জনি বেয়ারস্টো ওয়েস্টিন্ডিজের বোলারদের গোলাবারুদের জবাব দিচ্ছিলেন । আলজারি জোসেফের বলে বায়রস্ট্র যখন আউট হয়েছেন ইংল্যান্ড ততক্ষনে ৩০০ রান স্পর্শ করে ফেলেছে। শুরু ধাক্কা সামলে বেয়ারস্টোয়ের ব্যাট ভর করে ইংল্যান্ড তাদের বোলিং ইউনিটকে ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করার জন্য বেশ ভালো একটা সুযোগ করে দিয়েছিল।
ইংল্যান্ডের নখদন্তহীন বোলিং ও ক্রমা বোনারের লড়াই
৩১১ রানের জবাবে ক্রিস ওকস ও অভারটনের ধারবিহীন বোলিংকে পুজি করে ওয়েস্টিন্ডিজ প্রথম ইংনিসে উদ্ভোদনী জুটিতে ৮৩ রান করে। যদিও পরবর্তী ৪৪ রানে আরও তিন উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডে ম্যাচে ফিরে আসে। একদিকে উইকেট পড়লেও পাহাড়ের মত প্রতিজ্ঞ হয়ে খেলছিলেন ক্রমা বোনার । জেসন হোল্ডারকে সাথে নিয়ে পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৭৯ রান করে দলের বিপর্যয়কে কিছুটা সামাল দেন। মিডিল অর্ডার ব্যর্থ হলেও টেল-এন্ডারদের চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞায় ৬৪ রানের লিড নিতে সক্ষম হয় ওয়েস্টিন্ডিজ।
ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের ছন্দে ফেরার ইংগিত
৬৪ রানের লিডের বোঝা মাথায় নিয়ে ২৪ রানেই ইংলিশ ওপেনার লিজ বিদায় নিলে প্রথম ইংনিসের মত বিপর্যয়ের মত শংকা দেখা দিলেও অধিনায়ক রুট ও জেক ক্রোওলীর পার্টনারশিপে ইংল্যান্ড লিডের দেখা পায়। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ইংল্যান্ডে ১ উইকেট হারিয়ে ১১০ রান করে ফেলেছে। যার অর্থ দাঁড়ায় তাদের লিডের খাতায় ৪৬ রান যোগ হয়েছে এবং চতুর্থ দিনের খেলার নুন্যতম ৪৮ ওভার বাকি। ইংল্যান্ড যে রান রেটে ব্যাট করছে সেই রেট হিসাব করলে দিন শেষে বোর্ডে ১৯০ রানের মত থাকার কথা। যা পঞ্চম দিনের ভংগুর পিচে ওয়েস্টিইন্ডিজের যথেস্ট মাথা ব্যাথার কারন হতে পারে। যদিও এই কথাগুলোর মধ্যে অনেক যদি কিন্তু লুকিয়ে আছে। তাও প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দিয়ে জয়ের আসা করতেই পারে ইংল্যান্ড। যাহোক ক্রিকেটপ্রেমী হিসাবে আমরা এটা প্রত্যাশা করতে পারি টেস্টের পঞ্ছম দিন একটি রোমাঞ্ছকর দিন হবে।