সিলেটের নগরপিতা আনোয়ারুজ্জামান

বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্ক :

লক্ষাধিক ভোট পেয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে সিলেটের নতুন নগরপিতা নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।

বুধবার (২১ জুন) সন্ধ্যায় ১৯০টি কেন্দ্র থেকে বেসরকারিভাবে প্রাপ্ত ফলাফলে এ তথ্য জানা যায়।

নৌকা প্রতীকের আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ভোট পেয়েছেন ১ লাখ ১৮ হাজার ৭০০। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকের নজরুল ইসলাম বাবুল পেয়েছেন ৫১ হাজার ২০০ ভোট।

যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী এবারই প্রথম নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যে বসবাস করেন। আর পেশায় ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বাবুল মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়কের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি এর আগে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করলেও মেয়র পদে এই প্রথম নির্বাচন তার।

এই নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপিসহ তাদের সমমনা ও বামদলগুলো। ফলে নির্বাচনে অংশ নেননি বিএনপি নেতা ও বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। আর করোনায় প্রয়াত হয়েছেন সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান।

এর আগে বুধবার (২১ জুন) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৭৯ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ৪২ ওয়ার্ডে এই সিটিতে এবার পঞ্চমবারের মতো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

এবার মোট ভোটার সংখ্যা চার লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ দুই লাখ ৫৪ হাজার ৩৬০, নারী দুই লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৭ জন এবং ছয়জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন।

এদিকে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে ৪৬ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। বুধবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সামনে সিইসি এই তথ্য জানান।

সিইসি বলেছেন, ‘সিলেট সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে সুষ্ঠু ভোট হয়েছে। আপনারা নিশ্চয় জানেন, বিভিন্ন ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় কিন্তু এবার বিশৃঙ্খলা ছাড়াই আনন্দমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে।’

সিলেট সিটিতে মেয়র পদে ৮ জন, ৪২টি সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ২৭৩ জন এবং ১২টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৮৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

নির্বাচনের মেয়র প্রার্থীরা হলেন জাতীয় পার্টির মো. নজরুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাহমুদুল হাসান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলম, স্বতন্ত্র মো. আব্দুল হানিফ, মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন, মো. শাহ জাহান মিয়া এবং মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা।

সিলেট সিটি করপোরেশনের ভোটে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কা ছিল। ভোটার উপস্থিতি নিয়ে আওয়ামী লীগের যেমন চ্যালেঞ্জ ছিল, তেমনি নির্বাচন কমিশনেরও ছিল। বৈরী আবহাওয়া এবং বিএনপি-জামায়াত ভোট বর্জন করায় এ শঙ্কা প্রকট হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চিত্র অনেকটা ভিন্ন লক্ষ্য করা গেছে। প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রেই ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। বিশেষ করে নতুন ১৫টি ওয়ার্ডের ভোট কেন্দ্রে উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।

সব কেন্দ্রে নারী ভোটারদের উপস্থিতিও বেশি দেখা গেছে। অনুকূল আবহাওয়ার কারণেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে দেখা গেছে ভোটারদের উপস্থিতি। এসব ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করতে নেপথ্যে কাজ করেছেন স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলররা। মূলত তারাই ভোট টানতে নানা কৌশলে ভোটারদের আগ্রহী করে তুলেছেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *