সিলেটের প্রায় ১১শ’ হকার পাচ্ছেন নির্দিষ্ট ঠিকানা

বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ

সিলেটের সবচেয়ে ব্যস্ততম সড়ক বন্দরবাজার-চৌহাট্টা। প্রায় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ ব্যস্ত এই সড়কের পুরো ফুটপাত দখল করে রেখেছেন ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা। ফুটপাত ছাপিয়ে সড়কের অর্ধেকটাও তাদের দখলে। ফলে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে এই সড়কের যাত্রী ও পথচারীদের। লেগে থাকছে দীর্ঘ যানজট।

বিভিন্ন সময় সিলেট সিটি করপোরেশন থেরকে হকারদের সরিয়ে সড়ক ও ফুটপাত দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হলেও তাতে তেমন সাফল্য মিলেনি। বরং উচ্ছেদের পরপরই ফের সড়ক-ফুটপাত দখল করে নিয়েছেন হকাররা। অন্যদিকে পুলিশ-সিসিকের তাড়ার কারণে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদেরও সবসময় থাকতে হয় দৌড়ের উপর। এই সঙ্কটের স্থায়ী সমাধানের জন্য হকারদের পুনর্বাসনের দাবি ওঠেছে বিভিন্ন সময়। হকারদের পক্ষ থেকেও এমন দাবি জানানো হয়েছে। অবশেষে সে উদ্যোগ নিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) ও সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি)।

নগরের ভ্রাম্যমাণ হকারদের স্থায়ী ঠিকানা করে দিতে বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) থেকে কাজ শুরু করেছে সিলেট সিটি করপোরেশন। সিলেট মহানগর পুলিশের সহায়তায় নগর ভবনের পেছনের (লালদিঘীর পারস্থ) খালি মাঠে এক হাজার ৭০ হকারকে পুনর্বাসন কাজ শুরু হয়েছে। মাঠে খুঁটি গেড়ে বাঁশ বেঁধে দোকান তৈরির কাজ চলছে।

জানা গেছে, বন্দরবাজার-চৌহাট্টা সড়ক সম্প্রসারণ ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করছে সিলেট সিটি করপোরেশন। এই সড়ককে একটি ‘মডেল সড়ক’-এ পরিণত করার কথা জানিয়েছেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। সে লক্ষ্যে এই সড়ক থেকে ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ীদেরও সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সড়কের বিভিন্ন স্থানে ‘হকারমুক্ত এলাকা’ এলাকা সাইনবোর্ড টানিয়েছে সিসিক। ফলে প্রাথমিক অবস্থায় বন্দরবাজার-চৌহাট্টা সড়কের হকারদের পুনবার্সন করা হবে।

জানা যায়, নগর ভবনের পেছনের মাঠে বাঁশের খুঁটি গেড়ে তাতে সুতা বেঁধে দোকানের লাইন এবং সীমানা টানা হয়েছে। এরপর মাইকে ডেকে-ডেকে লটারির মাধ্যমে হকারদের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়। সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ফয়সল মাহমুদের তত্ত্বাবধানে চলে কার্যক্রম।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কাজটি শেষ করতে কয়েকদিন লাগবে। হকারদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার আওতায় এনে সিটি করপোরেশন থেকে লাইসেন্সও প্রদান করা হবে।

সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, এরআগে ২০০৭ সালে আরেকবার এই মাঠে হকারদের পুনবার্সনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিলো। তবে সেখানে ক্রেতারা না যাওয়ায় কিছুদিন পর হকাররা আবার ফিরে আসেন রাস্তা ও ফুটপাতে।

সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ফয়সল মাহমুদ আমরা গোপনীয়তার সঙ্গে ১ হাজার ৭০ জনের একটি তালিকা করেছি। তাদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে দোকান বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। কে কতটুকু জায়গা পেয়েছেন, মোট কতজন পেয়েছেন, তা কাজ শেষে বলা যাবে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ফুটপাত পথচারীদের জন্য ও সড়ক যানবাহানের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। সেখানে কাউকে ব্যবসায় বসতে দেওয়া হবে না। আমরা বিভিন্ন সময় সড়ক ও ফুটপাত দখলমুক্ত করার অভিযান চালিয়েছি। হকারদের দাবির প্রেক্ষিতে ও মানবিক কারণে আমরা তাদের খোলা মাঠে পুনর্বাসের উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করছি এরপর থেকে তারা আর সড়ক ও ফুটপাতে ব্যবসা নিয়ে বসবেন না।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *