সুনামগঞ্জের সড়কে এখন নৌকা চলে!
বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ
ভারতের পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতের ফলে সুনামগঞ্জ শহরসহ বিভিন্ন উপজেলার সড়কগুলো পানিতে ডুবে গেছে। সিএনজি অটোরিকশার পাশাপাশি এখন সড়কে চলছে নৌকা। গন্তব্যে পৌঁছতে অল্প ভাড়ায় এ নৌকাই যেন আশার আলো। ২০০৪ সালের ভয়াবহ বন্যার পর ২০২০ সালে সড়কে এমন নৌকা দেখছে হাওরবাসী।
সরেজমিনে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের নবীনগর, কাজির পয়েন্ট, উকিলপাড়া, বিহারি পয়েন্ট এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায়, সড়কে সিএনজি, অটোরিকশা ও রিকশার পাশাপাশি চলছে নৌকা। মানুষকে তার গন্তব্যে পৌঁছে দিতে ১০-১৫ টাকা ভাড়ার বিনিময়ে রাস্তায় নৌকা নিয়ে নেমেছেন মাঝিরা। এছাড়া সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে হঠাৎ সৃষ্ট বন্যার পানি দেখতে রাস্তায় ভিড় করছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সেই বন্যার পানিতে সড়কে নৌকা চলাচলে আনন্দ উপভোগ করতে দেখা গেছে তাদের। আবার পানিবন্দি মানুষের বিভিন্ন দৈনন্দিন কার্যক্রমেও নৌকার ব্যবহার দেখা গেছে।
কাজির পয়েন্ট এলাকার বাসিন্দা রফিক চৌধুরী বলেন, চারদিকে পানি আর পানি। কোথাও বের হওয়া যায় না, বাজার সদাই করা যায় না। রাস্তায় দেখলাম নৌকা চলছে। তাই উঠান থেকেই নৌকায় উঠে বাজারের কাছাকাছি পর্যন্ত গেলাম। পানি না কমলে নৌকাই হবে আমাদের ভরসা।
ব্যবসায়ী আব্দুল হান্নান বলেন, ঘরে পানি, বাইরে পানি, দুদিন ধরে পানির মধ্যেই আছি, দোকানেও পানি ঢুকে গেছে। রাস্তায় বের হয়ে হাঁটু পানিতে বাধ্য হয়েই নৌকায় ওঠা। সড়কে নৌকা নিয়ে আসা মাঝি মতিউর মিয়া বলেন, সুরমা নদীর পানি বেড়ে রাস্তায় চলে এসেছে। তাই আমরা গরিব মানুষ রাস্তায় নৌকা নিয়ে নামছি। যতটুকু রাস্তায় পানি আছে ততটুকুই আমরা মানুষকে পৌঁছে দিচ্ছি। বিনিময়ে ভাড়া নিচ্ছি ১০-১৫ টাকা।
উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জে ভারতের পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতের ফলে শহরের নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে পানি প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সুরমা নদীর পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। রোববার বিকেল পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৬৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা সকালে ছিল ৭০ সেন্টিমিটার।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সবিবুর রহমান বলেন, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আবহাওয়া কিছুটা পরিষ্কার হয়েছে, যার কারণে সকালের তুলনায় সুরমা নদীর পানি ৭ সেন্টিমিটার কমেছে। যদি আবারও বৃষ্টি আসে এবং ভারতে মেঘালয় চেরাপুঞ্জিতে ভারী বর্ষণ অব্যাহত তাকে তাহলে সুরমার পানি আবারও বৃদ্ধি পাবে।