১৯৯৯-২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জার্সী
Bangladesh Cricket Team Jersey 1999-2019
জার্সীর রঙ বা ডিজাইন ইত্যাদি নিয়ে মতানৈক্য থাকতে পারে কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা যখনই বাংলাদেশের হয়ে বিশ্বকাপে খেলেছেন তারা চেস্টা করেছেন দেশের হয়ে কিছু করার জন্য। অনেক ক্ষেত্রে সফল হয়েছেন আবার অনেক সময় দলের প্রয়োজন মেটাতে পারেননি। বিভিন্ন সময়ে দলের জয় ও পরাজয়ের সাক্ষী হয়ে থেকেছে বাংলাদেশ দলের জার্সী।
জার্সীগুলো দলের প্রতীক হয়ে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছে মাত্র। সেখানে ব্যাক্তিগত পছন্দ অপছন্দের উর্ধে দলের প্রয়োজন ছিল সবার উপরে। আমরা এই ব্লগের চেস্টা করেছি আমাদের লেখনীর মাধ্যমে বাংলাদেশ দলের জার্সীর বিবর্তন আপনাদের সমক্ষে তুলের ধরার জন্য।
১৯৯৯ (Bangladesh cricket team jersey in 1999)
১৯৯৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাংলাদেশ প্রথমবারের মত বিশ্ব মঞ্চে নিজেদের মেলে ধরার সুযোগ পেয়েছিল। তাই ১৯৯৯ বিশ্বকাপের জার্সী খুব স্বাভাবিকভাবেই ভক্তদের মনে দাগ কেটে আছে।
জার্সীর ঠিক মাঝখানে বাঘের মত ডোরাকাটা দাগগুলো বাংলাদেশের প্রতীকের একটা প্রতিচ্ছবি ছিল। কলার ও হাতলে হ্লুদ রং যেন এটা যে টাইগারদের জার্সী সেই ব্যাপারে সাক্ষী দিচ্ছিল । এই জার্সীটি বানিয়েছিল এসিক্স একটা কমন থিমের উপর।
১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ বিশ্ব ক্রিকেটে তাদের আগমনী বার্তা দিয়েছিলে পরাশক্তী পাকিস্তানকে মাটিতে নামিয়ে। যদিও বাংলাদেশ সুপার সিক্সে ওঠতে পারেনি তারপরও তাদের জাত চিনিয়েছিল পাকিস্তান ও স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে।
২০০৩ (Bangladesh cricket team jersey in 2003)
২০০৩ সালের বিশ্বকাপ বাংলাদেশ খেলতে নেমেছিল গাড় সবুজের দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে। এছাড়া জার্সীর দুই দিকে লাল বর্ডার বাংলাদেশের ক্রিকেটের নুতুন সূর্যোদয়ের আভাস দিচ্ছিল। যদিও ২০০৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ শেষ পর্যন্ত আক্ষরিক অর্থে বাংলাদেশের জন্য ছিল এক বিশাদময় অধ্যায়ের নাম।
নিচের সারির দল কেনিয়া ও কানাডার কাছে বাংলাদেশ হেরেছিল অপ্রত্যাশিতভাবে । কিন্তু মরার উপর খাড়ার ঘা পড়ে যখন মাশরাফি বিন মর্তুজা চোট আক্রান্ত হয়ে দেশে ফিরে যান।
২০০৭ (Bangladesh cricket team jersey 2007)
২০০৭ সালের জার্সীতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার প্রতিফলন দেখা যায়। যেখানে লাল-সবুজের ঝলখানীর মাঝে সাদা অক্ষর দিয়ে লেখা ছিল বাংলাদেশ আর দুইদিকে হালকা হ্লুদের আভা যেন ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছিল।
আগের দুই বিশ্বকাপে ভালো না করলেও ২০০৭ সালে বাংলাদেশ তারুণ্যের শক্তিতে উজ্জীবিত ছিল। তামিম , সাকিব ও মুশফিকদের কাঁধে ভর করে বাংলাদেশ সুপার এইটে ওঠে প্রথম বারের মত। তারকাসমৃদ্ধ ভারতীয় দলকে ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে নাস্তানুবোধ করে নিজেদের পরিণত হওয়ার জানান দেয় বাংলাদেশ। আর মূলত সেইখান থেকেই বাংলাদেশ ক্রিকেটের উত্থানের শুরু হয়। ভারতের পর সুপার এইটে শক্তিশালী দক্ষিন আফ্রিকাকে হারিয়ে উন্নতির ধারা অক্ষুন্ন রাখে।
২০১১ (Bangladesh cricket team jersey 2011)
২০০৭ সালে মত এই জার্সীতেও লাল রংকে প্রধান্য দেয়া হয়। যদিও হালকা সবুজের পরিবর্তে প্রথম বারের মতন কালচে সবুজ ব্যবহার করা হয়। লেখার রং আগের বারের মত সাদা রাখা হয়।কলারের ডিজানের ক্ষেত্রেটা পরিবর্তন এনে ভি গলা ব্যবহার করা হয়।
২০১১ সালে ঘরের মাটিতে বিশ্বকাপ হওয়ায় প্রত্যাশার পারদ ছিল আকাশচুম্বী। কিন্তু বাংলাদেশ তাদের নামের প্রতি সুবিচার করতে ব্যার্থ হয়। ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসকে হারালেও ওয়েস্টইন্ডিজ ও সাউথআফ্রিকার বিপক্ষে যথাক্রমে ৫৮ ও ৭৮ রানে অলআউট হওয়ার লজ্জা উপহার দিয়ে বিশ্বকাপের ইতি টানে।
২০১৫ (Bangladesh cricket team 2015 jersey)
১৯৯৯ সালে বঘের ডোরার ডিজাইন ব্যবহার করা হলেও ২০১৫ সালেই প্রথম বাংলাদেশের জার্সীতে বাঘের প্রতিকৃতি যোগ করা হয়। সবুজ স্ট্রাইপের উপর সাদা বাঘের ছাপ জার্সীতে এক নুতুন মাত্রা যোগ করেছিল। তাছাড়া কলার ছিল সম্পূর্ণ লাল রঙের । সোজা কথায় বলতে গেলে এযেন একখন্ড বাংলাদেশের এক প্রতিচ্ছবি।
মহাকাব্যিক এক ম্যাচে শক্তিশালী ইংল্যান্ডকে হারিয়ে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মত কোয়াটার ফাইনালে ওঠার গৌরব অর্জন করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভারতের সাথে হেরে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের স্বপ্নযাত্রার সমাপ্তি ঘটে।
২০১৯ (Bangladesh cricket team jersey world cup 2019)
২০১৯ বিশ্বকাপের জার্সীতে ২০০৩ সালের মত গাড় সবুজ রং ব্যবহার করা হয়েছিল। যদিও ২০১৫ সালের তুলানয় শেডের কিছুটা পরিবর্তন করা হয়। এছাড়া জ্যামিতিক স্ট্রিপও ব্যবহার করা হয়। অন্যান্যবার লালকে কলারে ব্যাবহার করা হলেও ২০১৯ বিশ্বকাপে লালকে কেন্দ্রীভূত করে এর উপর বাংলাদেশের নামটা লিখা হয় সাদা হরফে।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের রাজপুত্র সাকিব আল হাসান ২০১৯ বিশ্বকাপ মাতিয়েছিলেন ব্যাট ও বলের জাদুতে। যদিও দলীয় বাজে পারফরম্যান্সের জন্য শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ড থেকে খালি হাতে ফেরে টাইগাররা।
শেষ কথা
১৯৯৯ থেকে ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত হয়ত জার্সীতে রং বা ডিজাইনের তারতাম্য ছিল এই যা। প্রতিটি জার্সীই সুন্দর এবং সবচেয়ে বড় কথা বিশ্ব মঞ্চে বাংলাদেশকে মেলে ধরেছে। কিন্তু অনেকের ব্যাক্তিগত পছন্দ থাকতে পারে।