জাতির মূল উদ্দেশ্যের পথে ‘কাঁটা’ রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম: পরিকল্পনামন্ত্রী
বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ
সামরিক শাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করার পদক্ষেপকে বাঙালি জাতির মূল উদ্দেশ্যের পথে ‘কাঁটা’ বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
‘ঘৃণ্য আইন ইনডেমনিটি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে প্রগতিশীল সাংবাদিক মঞ্চ। ‘বঙ্গবন্ধু আমাদের অস্তিত্বে, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি আস্থায়, প্রগতিশীলতার পক্ষে আর সকল সাম্প্রদায়িকতার বিপক্ষে আমাদের অবস্থান’ স্লোগানকে সামনে রেখে সংগঠনটি আজই আত্মপ্রকাশ করেছে।
দুজন সামরিক শাসক ও তাঁদের সঙ্গীসাথিরা অনেক মাইন পুঁতে রেখে গেছেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চলার পথে এখনো অনেক মাইন পোঁতা আছে উল্লেখ করে আলোচনা সভায় দেওয়া বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘দায়মুক্তির পরম্পরা হিসেবে পরবর্তী পর্যায়ে দ্বিতীয় সামরিক শাসক (হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ) আরেকটি পেরেক মেরে রেখেছে। কীসের ওপরে? আমাদের জাতিসত্তার ওপরে। আমাদের রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে পুনরায় প্রবর্তন করে। সংবিধানের মূলবাণী অসাম্প্রদায়িকতা, সেটাকে সে ঘা দিয়ে চলে গেল এবং সেটা আমাদের পদে পদে বিভ্রান্ত করছে। জাতির মূল উদ্দেশ্যের পথে কাঁটা গেড়ে রেখে গেছে। এ ধরনের আরও অসংখ্য মাইন প্রধানমন্ত্রীর পথে আছে।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যাকারীদের দায়মুক্তি দিতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছিল। দায়মুক্তির বিষয়টি অস্বস্তিকর উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘ইনডেমনিটির মাধ্যমে দায়মুক্তি কোথাও হয়েছে কি না, আমার জানা নেই। ইনডেমনিটির মাধ্যমে বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি করেছিলেন জিয়াউর রহমান।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, যারা বঙ্গবন্ধুকে গুলি করেছে, শেখ রাসেলকে হত্যা করেছে, জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছে, হত্যাকারীদের শাস্তি হয়েছে। কিন্তু যারা হত্যার পেছনে ষড়যন্ত্রকারী ছিল, যারা এর সুবিধা ভোগ করেছে, তারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। একটি তদন্ত কমিশন গঠন করে এসব হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কারিগরদের বিচারের দাবি জানান তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, হত্যাকারীদের দায়মুক্তি দিয়ে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত করা হয়। শাস্তির বদলে তাদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। এই ধরনের আইন পৃথিবীর কোথাও হতে পারে, সেটা সভ্য সমাজ কল্পনাও করতে পারে না। কিন্তু জিয়াউর রহমান, খন্দকার মোস্তাকরা সে ঘৃণ্য কাজই বাস্তবায়ন করেছিল।
সাংবাদিক নেতা মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা ও তারপর সামরিক শাসনের মাধ্যমে এ দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করা হয়েছিল। শেখ হাসিনা সেই হত্যাকারীদের বিচার করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি কোনো নির্বাহী আদেশ দিয়ে নয়, আইন করে বিচার করেছেন।
প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে জিয়াউর রহমান পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে আইনে পরিণত করে খুনিদের আরও স্বার্থ রক্ষা করেন।