জাফলংয়ে ১০ টাকার ‘প্রবেশ ফি’ চালু, মিলবে ফ্রি ওয়াই-ফাই
বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ
শীত এবং বর্ষা মৌসুমসহ সব সময়ই বেড়ানোর জন্য উপযুক্ত স্থান প্রকৃতিকন্যা সিলেটের বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র জাফলং। জাফলংয়ের এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই ভিড় করে হাজারো পর্যটক। তবে এখন থেকে এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে পর্যটকদের দিতে হবে প্রবেশ ফি। পর্যটনকেন্দ্র জাফলংয়ে বেড়াতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তায় এখন তিনটি পয়েন্ট নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এসব পয়েন্ট দিয়ে জাফলংয়ে ঢোকার সময় পর্যটকদের জনপ্রতি ১০ টাকা হারে ‘প্রবেশ ফি’ দিতে হবে।
বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) থেকে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটির মাধ্যমে গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসন এই কার্যক্রমের তদারকি করছে।
১০ টাকা প্রবেশ ফি দিলে পর্যটকরা নির্ধারিত খরচে ট্যুর গাইড, ফটোগ্রাফার ও নৌকা ভাড়া করতে পারবেন। পাশাপাশি থাকবে বিনা মূল্যে ওয়াই-ফাই সেবা।
পর্যটন উন্নয়ন কমিটি সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষ জাফলংয়ে বেড়াতে আসে। প্রতিদিন দুই থেকে তিন হাজার মানুষের সেখানে সমাগম হয়। ছুটির দিনগুলোতে এই সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। বেড়াতে আসা পর্যটকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তিনটি পয়েন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জাফলং পর্যটন উন্নয়ন কমিটির সভাপতি ও গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিলুর রহমান বলেন, ১০ টাকা ফি দিয়ে প্রাথমিকভাবে পর্যটকদের ফ্রি ওয়াই-ফাই সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এরপর টিকিট দেখালে ফটোগ্রাফার, ট্যুর গাইড ও নৌকার মাঝি সহজে পাওয়া যাবে। তিনটি পর্বে ভাড়া নিয়ে একধরনের নৈরাজ্য ছিল। সেটি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এরপরও কোনো পর্যটক অভিযোগ করলে এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিন মাস এই কার্যক্রম পরীক্ষামূলকভাবে দেখার পর পুরো জাফলংকে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনাও বাস্তবায়ন করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
সিলেটের প্রকৃতিকন্যা জাফলংয়ের ওপারে খাসিয়া জৈন্তা পাহাড় আর এপারে জাফলংয়ের বুক চিরে বয়ে গেছে পিয়াইন নদী। পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ পানিতে পর্যটক নারী-পুরুষের এই ‘ডুবোখেলা’ দেখা যায় ভোর থেকে সন্ধ্যা অবধি।
পাহাড়ের বুক চিরে বয়ে চলছে মায়াবীঝর্ণা, আর নদীর বুকে স্তরে স্তরে সাজানো নানা রঙের নুড়ি পাথর। দূর থেকে তাকালে মনে হবে আকাশের গায়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে পাহাড়। পাহাড়ের গায়ে নরম তুলার মতো ভেসে বেড়াচ্ছে মেঘরাশি। প্রকৃতির এক অপরূপ সৌন্দর্য জাফলং। প্রকৃতি যেন নিজ হাতে সাজিয়েছে জাফলংয়ের ভারতের সীমান্ত ঘেঁষা দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই জনপদকে। আবার ঋতু- বৈচিত্র্যের সঙ্গে জাফলংও তার রূপ বদলায়। সৌন্দর্যে আসে বৈচিত্র্য।
বর্ষায় গেলে এখানে দেখা যায় ওপারের পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝর্ণাধারা। সবুজের বুকে নেমে আসা ঝর্ণাধারায় সূর্যের আলোর ঝিলিক ও পাহাড়ে ভেসে বেড়ানো মেঘমালা মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে পর্যটকদের।