জুড়ীতে মসজিদের জমি ও টাকা নিয়ে সংঘর্ষ, বৃদ্ধ নিহত
বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্ক :
মৌলভীবাজারের জুড়ীতে মসজিদ সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আব্দুল জলিল (৬০) নামে একজন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের চাটেরা গ্রামে ঘটেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৬ জন।
নিহত আব্দুল জলিল ওই গ্রামের মৃত ছখাত মিয়ার ছেলে। নিহতের ছেলে বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়েরের পর পুলিশ দুই জনকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, দীর্ঘদিন থেকে জায়ফরনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ চাটেরা জামে মসজিদের জায়গাসহ বিভিন্ন বিষয়ে একই গ্রামের আব্দুল জলিল ও মৃত মজর আলীর ছেলে ইয়াছিন মিয়া গংদের বিরোধ চলছিল।
ঘটনার দিন জুমার নামাজের পর মসজিদের ২০ হাজার টাকার হিসেব নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। এসময় স্থানীয় মুসল্লিরা বিষয়টি তাৎক্ষণিক সমাধান করে দেন।
এ ঘটনার জের ধরে ইফতারের পর আব্দুল জলিলকে বাড়ীর সামনের রাস্তায় একা পেয়ে ইয়াছিন মিয়া, তার ভাতিজা তারেকুল ইসলাম তারা মিয়াসহ একটি সংঘবদ্ধ দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।হামলায় ঘটনাস্থলেই আব্দুল জলিলের মৃত্যু হয়।
এ সময় আব্দুল জলিল চিৎকার করলে তার ছেলে রনি মিয়া (২৬), শাহিদ মিয়া (২৪), ভাগনা সাঈদ আহমদ (১৮) ঘটনাস্থলে ছুটে আসলে তাদেরকেও ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়।
এ ঘটনায় গুরুতর আহত রনি মিয়া ও ইয়াছিন মিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
নিহত আব্দুল জলিল মিয়ার স্ত্রী রিনা বেগম বলেন, ইয়াছিন মিয়া, তার ভাতিজা তারেকুল ইসলাম তারা মিয়াসহ তাদের আত্মীয়রা নির্মমভাবে কুপিয়ে তার স্বামীকে হত্যা করেছে। তারা তার ছেলেদেরও কুপিয়েছে। সরকারের কাছে তাদের ফাঁসি দাবী করেন তিনি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জাকির হোসেন মনির বলেন, উভয় পক্ষের মধ্যে জমি ও মসজিদের টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবি করেন তিনি।
এ ব্যাপারে জায়ফরনগর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুম রেজা বলেন, হত্যাকাণ্ডের যে ঘটনাটি ঘটেছে এটি সত্যি দুঃখজনক। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতি দাবি জানান তিনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.সমরজিৎ সিংহ দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় একজন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় আরও ৬ জন আহত হয়েছেন।গুরুতর আহত ২ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে জানান এ চিকিৎসক।
এ ব্যাপারে জুড়ি থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসেন বলেন, দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় এক জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে বাদী হয়ে একটি খুনের মামলা দায়ের করেছেন, এব্যাপারে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।