তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদকে পদত্যাগের নির্দেশ
ফেসবুক লাইভে বিতর্কিত মন্তব্য এবং অডিও ফাঁস হয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে থাকা তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রতিমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা এরই মধ্যে অবহিত করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।সোমবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে নিজের সরকারি বাসভবনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
সম্প্রতি অনলাইনে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি ও প্রতিমন্ত্রী মুরাদের মধ্যকার একটি অডিও ফাস হয়েছে।বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যম যেমন ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার ইত্যাদিতে অডিওটি ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। সেই অডিওতে ডা.মুরাদ মাহিকে উদ্দ্যেশ্য করে বেশ কয়েকবার কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। অডিও ক্লিপটির প্রথম পর্যায়ে চিত্রনায়ক ইমনকেও তার সাথে কথা বলতে শুনা যায়। অডিওতে মাহিয়া মাহিকে বেশ কয়েকবার ধর্ষনের হুমকি দিতে শুনা যায় ডা. মুরাদকে।
অডিওটি ফাস হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় ওঠে । যেখানে আওয়ামিলীগের বিভিন্ন অংগসংঠনও প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদের পদত্যাগ দাবি করে। নারীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অপ্রীতিকর আচরণের জন্য সুশীল সমাজের পক্ষ থেকেও প্রতীমন্ত্রীর বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি করা হয়।
এদিকে অডিও ক্লিপটি ফাশ হওয়ার পর তার অবস্থান পরিষ্কার করার জন্য মাহি সবার উদ্দেশ্যে একটি ভিডিও বার্তা তার ব্যাক্তিগত ফেসবুক পেইজে দিয়েছেন। তিনি বর্তমানে ওমরাহ পালনের জন্য সৌদিআরবে অবস্থান করছেন। ভিডিওবার্তায় তিনি নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে নিজেকে কেবলমাত্র পরিস্থিতির স্বীকার বলে অভিহিত করেন।তিনি আরও যোগ করেন সেই মুহূর্তে তার কিছু করার ছিলনা এবং ঘটনাটি দুই বছর আগের।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ডা. মুরাদকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামীকালের মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) মধ্যেই তাকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরেই বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে আলোচনায় ছিলেন জামালপুর-৪ আসনের সরকারদলীয় এ সংসদ সদস্য।
বিভিন্ন সময় আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন মুরাদ হাসান। সম্প্রতি ফেসবুক লাইভে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তার ছেলে তারেক রহমান ও নাতনি জাইমা রহমানকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন তিনি।
এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেত্রীদের নিয়েও আপত্তিকর ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের অভিযোগ ওঠে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে মুরাদের পদত্যাগ দাবি করেন ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন বর্তমান এবং সাবেক নেত্রী।
এরপর থেকেই মুরাদ হাসানের পদত্যাগের দাবি আরও জোরালো হয়ে ওঠে।