পুনঃময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে রায়হানের মরদেহ তুলেছে পিবিআই
বিয়ানীবাজারের ডাকঃ
সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে নিহত রায়হান উদ্দিনের (৩০) মরদেহ কবর থেকে তোলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ১০ টায় পুনঃময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেজবাহ উদ্দিন ও সজিবুর রহমান, পিবিআইর এসপি খালেদুজ্জামান এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে আখালিয়া নবাবী মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থান থেকে মরদেহ তোলা হয়।
মরদেহ উত্তোলনে সকাল ৯টায় ঘটনাস্থলে পৌঁছেন ম্যাজিস্ট্রেটসহ পিবিআইর টিম।
এরপর সকাল ৯টা ২০ মিনিটে কবর খোঁড়া শুরু হয়। মরদেহ উত্তোলনের পর ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে নেওয়া হয়।
মামলার তদন্ত সূত্র জানায়, গত বুধবার (১৪ অক্টোবর) মহানগর পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের অনুমতি দেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট।
এদিকে পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশক্রমে মামলাটির দায়িত্ব পাওয়ার পর গত বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থল বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি ও কাস্টঘর এলাকা এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নিহত রায়হানের বাড়ি আখালিয়া নেহারিপাড়া এলাকায় যান পিবিআই সদস্যরা।
পরিদর্শনকালে পিবিআই টিম ফাঁড়ি সংলগ্ন পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সিসিটিভি ফুটেজ ও কাস্টঘর এলাকার সিসি ফুটেজ সংগ্রহ করেন। এছাড়া কাস্টঘরে নিহত রায়হানকে গ্রেফতারের সময় প্রত্যক্ষদর্শী সুরাই লালের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তদন্ত দল। এরপর স্থানীয় ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
ব্রিফিংয়ে পিবিআইর এসপি খালেদুজ্জামান বলেন, আমরা তথ্য, আলামত ও সিসি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। কয়েকজনের বক্তব্য নিয়েছি। সেগুলো পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্তে উপনীত হবো। এছাড়া তদন্তের স্বার্থে পুনঃময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কবর থেকে তোলা হলো।
গত রোববার (১১ অক্টোবর) সকালে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রায়হান উদ্দিন মারা যান। তিনি সিলেট নগরের আখালিয়া নেহারিপাড়া এলাকার বাসিন্দা। পুলিশের দাবি, ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে মারা গেছেন রায়হান। নিহতের পরিবারের লোকজন ও স্বজনদের দাবি, বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হানকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনায় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করেছে সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি)। সাময়িক বরখাস্ত চার পুলিশ সদস্য হলেন- বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া, কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ মিয়া ও টিটু চন্দ্র দাস। আর প্রত্যাহার তিন পুলিশ সদস্য হলেন- সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেন। তবে ঘটনার দিন সকাল থেকে এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া পলাতক রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে সব বর্ডার এলাকায় বেতার বার্তা পাঠানো হয়েছে, যাতে দেশত্যাগ না করতে পারেন।
এদিকে নিহতের স্ত্রীর দায়ের করা হত্যা মামলাটি পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে স্থানান্তর করা হয়। মামলার তদন্তের দায়িত্ব পেয়েই মাঠ নেমেছে পিবিআই। এছাড়া তদন্তের স্বার্থে পুনঃময়নাতদন্তের জন্য বৃহস্পতিবার সকালে মরদেহ কবর থেকে তোলা হলো।