প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত আস্থাভাজন ছিলেন মাহমুদ উস সামাদ
বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ
১৯৫৫ সালের ৩ জানুয়ারি ফেঞ্চুগঞ্জের নুরপুরের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম নেয়া মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী তরুণ বয়স থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক ছিলেন। মরহুম দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী এবং মা আছিয়া খানম চৌধুরীর সুসন্তান সামাদ চৌধুরী এক সময় হয়ে উঠেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজন। নিজের যোগ্যতা, সততা ও দলের প্রতি গভীর অনুরক্তি তাঁকে নিয়ে যায়ে এই অনন্য উচ্চতায়।
দীর্ঘ বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন ছিলো সদ্য প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর। তিনি সিলেট-৩ আসনে (দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জের একাংশ) আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বিগত তিন মেয়াদে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হ্যাটট্রিক জয়ী হন। সদ্য হওয়া সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে সহ-সভাপতি ছিলেন তিনি।
১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চাকা প্রতীক নিয়ে প্রথম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এরপর ১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ও ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও অল্প ভোটের ব্যবধানে তিনি বিজয়ী হতে পারেননি।
কিন্তু হাল ছাড়েননি মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী। দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বাসী সৈনিক হিসেবে রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের মহাসচিব নির্বাচিত হন।
সর্বশেষ ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীকে এক লাখ ৭৬ হাজার ৫৮৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির শফি আহমদ চৌধুরী ৮৩ হাজার ২৮৮ ভোট পেয়েছিলেন। এর আগে ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি ৯৭ হাজার ৫৯৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়ে তিনি প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির শফি আহমদ চৌধুরী ৫৪ হাজার ৯৫৫ ভোট পেয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, সামাদ চৌধুরী এমপি ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) বেলা ২টা ৪০ মিনিটের সময় শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করে চলে যান না ফেরার দেশে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিলো ৬৫ বছর। তিনি স্ত্রী ও ১ পালকপুত্র রেখে গেছেন।
এর আগে সামাদ চৌধুরীকে গত রোববার রাতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তিনি সোমবার সকালে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। বিকালে ফলাফল পজিটিভ আসে। শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে এমপিকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিলো।
জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী এমপি। গত রোববার তিনি ঢাকা যাওয়ার পথে বিমানের মধ্যেই অসুস্থ অনুভব করায় সেখান থেকে সরাসরি তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে এ সংসদ সদস্য করোনার টিকা নেন। তারপর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছিলো না।
কয়েক দিন আগেও তাঁর নির্বাচনি এলাকার দক্ষিণ সুরমা, বালাগঞ্জ ও ফেঞ্চুগঞ্জে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তিনি।